স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৯ মে : 2০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দেশে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ বছর এই সরকারের নয় বছর পূর্তি হয়েছে। এই উপলক্ষ্যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহার পৌরহিত্যে সোমবার রাজধানীর এক বেসরকারি হোটেলে সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য ও আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নরেন্দ্র মোদী ৯ বছরে দেশের উন্নয়নে কি কি কাজ করেছেন সেই গুলি তুলে ধরেন। তিনি বলেন এক্ট ইস্ট পলিসির ফলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে ত্রিপুরা রাজ্য। ত্রিপুরাকে হীরা মডেল দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সর্বদা বলে থাকেন উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন ছাড়া ভারতের উন্নয়ন সম্ভব নয়। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করার উপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
জলপথে যোগাযোগের বিষয়ে ত্রিপুরা রাজ্যে কখনো ভাবা হয়নি। বর্তমানে জলপথে যোগাযোগের কথাও ভাবা হচ্ছে। জলপথ তৈরি হচ্ছে বর্তমানে। ২০১৪ সালের পূর্বে ভারতে বিশ্ব মানের একটিও ট্রেন ছিল না। কিন্তু শেষ ৯ বছরে ভারতে বিশ্ব মানের ট্রেন চালু হয়েছে ৯ টি। ত্রিপুরা রাজ্যেও বর্তমানে ১২ থেকে ১৩ টি এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন ২০১৪ সালের পূর্বে মাত্র ৫ টি শহরে মেট্রো পরিষেবা ছিল। বর্তমানে ১৫ টি শহরে মেট্রো পরিষেবা চালু রয়েছে। ২০১৪ সালে দেশের মেডিক্যাল কলেজ ছিল ৬৪১ টি। প্রধানমন্ত্রী হিসানে নরেন্দ্র মোদীর ৯ বছরে ৭০০ টি নতুন মেডিক্যাল কলেজ হয়েছে। ত্রিপুরা রাজ্যে এইমস-এর অনুকরণে মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের চেষ্টা চলছে। ডেন্টাল কলেজ স্থাপন হয়ে গেছে। গত ৯ বছরে দেশে ৩৯০ টি নতুন বিশ্ব বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। করোনা প্রকোপ চলাকালীন সময় মানুষ যথেষ্ট সমস্যার মধ্যে ছিল। সেই সময় মানুষকে যেন না খেয়ে থাকতে না হয় তার জন্য বিনামূল্যে রেশনের ব্যবস্থা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
ত্রিপুরা রাজ্যের ৭.১৩ লক্ষ পরিবার বিনামূল্যে রেশন পেয়েছে। আয়ুস্মান ভারত প্রকল্পের মাধ্যমে গরীব অংশের মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের ব্যবস্থা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। জন ঔষধি কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এই জন ঔষধি কেন্দ্র থেকে অনেক কম মূল্যে মানুষ ঔষধ ক্রয় করতে পারে। ত্রিপুরা রাজ্যে ২০ টি জন ঔষধি কেন্দ্র রয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, মানুষের মৌলিক সমস্যা গুলি সমাধানের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। আত্মসম্মান নিয়ে যেন মানুষ বেঁচে থাকতে পারে তার ব্যবস্থা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা গ্রামীন প্রকল্পে এখনো পর্যন্ত ত্রিপুরা রাজ্যে ২ লক্ষ ১ হাজার ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।
৪৮ হাজার ঘর নির্মীয়মাণ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকার ত্রিপুরা রাজ্যকে আরও ১ লক্ষ ঘরের অনুমোদন দিয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ত্রিপুরা রাজ্যের শহর এলাকার জন্য এখনো পর্যন্ত ৮৭ হাজার ঘরের অনুমোদন পাওয়া গেছে। জল জীবন মিশনের মাধ্যমে প্রতিটি বাড়িতে বিষুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ত্রিপুরা রাজ্যের প্রায় ৬৩ শতাংশ বাড়িতে ইতিমধ্যে বিসুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। দেশের পূর্বতন সরকার গুলি দুর্নীতির সাথে যুক্ত ছিল। কিন্তু দুর্নীতি ছাড়াও একটা সরকার চলতে পারে এইটা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী করে দেখিয়েছেন বলেও দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা। এইদিন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নরেন্দ্র মোদী ৯ বছরে যে সকল প্রকল্প গুলি চালু করেছেন সেইগুলি বিস্তারিত তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিনের মত বিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন স্যন্দন পত্রিকার সম্পাদক সুবল কুমার দে সহ অন্যান্য বরিষ্ঠ সাংবাদিকরা।
