Thursday, March 28, 2024
বাড়িরাজ্যউড়ে এসে জুড়ে বসেছে : সুদীপ

উড়ে এসে জুড়ে বসেছে : সুদীপ

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৩ নভেম্বর : ভারতীয় জনতা পার্টির মূলমন্ত্র সবকা সাথ, সবকা বিকাশ ও সবকা বিশ্বাস। দেশ, সমাজ এবং ব্যক্তির স্বার্থে এই মূলমন্ত্র ভারতীয় জনতা পার্টির। কিন্তু ত্রিপুরা রাজ্যে সবকা সাথ, সবকা বিকাশ ও সবকা বিশ্বাসের মূলমন্ত্র বাস্তবায়িত হচ্ছে না। ভারতীয় জনতা পার্টি যে চিন্তায় আবদ্ধ সেটা হল দেশের স্বার্থ, দল এবং ব্যক্তি। বিকাশ যদি রাজ্যে হয়ে থাকে তাহলে বিকাশের উপর ভোট হতো। আর বিশ্বাসের উপর ভোট হলে হামলা হুজ্জোতি, ভোটে বাধা, হুংকার এগুলি দেওয়া হতো না।

মঙ্গলবার এম এল এ হোস্টেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনভাবেই তোপ দাগলেন ভারতীয় জনতা পার্টির স্বদলীয় দুই বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন এবং আশীষ কুমার সাহা। ভোট মানে উৎসব এবং মিলন মেলা। পূর্বে উৎসবের মেজাজে ভোট হতো। বিভিন্ন দল ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করত। কিন্তু ইদানীংকালে রাজ্যবাসী যে ঘটনাগুলি চাক্ষুষ করছে, তা চিন্তার বাইরে। প্রতিদিন হামলা, হুজোতি ও সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটছে। গত সোমবার রাতে ১ নং ওয়ার্ডের এক প্রার্থীর বাড়িতে দুর্বৃত্তরা হানা দিয়ে গুলি ছুড়েছে। ৫ নং ওয়ার্ডেও প্রতিহিংসামূলক স্কুটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এগুলি তীব্র ভাষায় নিন্দা জানানো হচ্ছে। ভারতীয় জনতা পার্টি চিন্তায় আবদ্ধ তা হলো দেশ এবং জনগণ। ত্রিপুরা রাজ্যে এক নেতার সৌজন্যতায় রাজ্যের কৃষ্টি, সংস্কৃতি উপর ভাটা পড়েছে। সারা দেশের মানুষ অন্যভাবে চিনতে শুরু করেছে। কিন্তু ভারতীয় জনতা পার্টি এ ধরনের সন্ত্রাস করার জন্য বলে দেয়নি। এ ধরনের ঘটনার ফলে পুরা রাজ্যের এবং প্রধানমন্ত্রী বদনাম হচ্ছে। একটা লোকাল বডির নির্বাচনে উন্নয়নকে সামনে রেখে ভোট করা দরকার ছিল।

 কিন্তু নির্বাচনী প্রচারে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত চিন্তা এবং আঘাত হচ্ছে। কিন্তু যারা এই ধরনের সন্ত্রাসের লিপ্ত হয়েছে তারা কে। তারা বিজেপি হয়ে কাজ করছে। যারা গত ৩ মার্চের পর জার্সি বদলিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করেছে। এবং জার্সি যারা বদলিয়েছে তারা দীর্ঘ ২৫ বছর সিপিআইএমের সমাজদ্রোহী হয়ে কাজ করেছে। ত্রিপুরায় বিগত বিধানসভা নির্বাচনের পর বিজেপি নেতারা প্রত্যেকটি মন্ডল থেকে সেইসব সি পি আই এম গুন্ডা ও সমাজদ্রোহীদের নামের তালিকা নিয়ে গ্রেফতার করানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু মন্ডল থেকে সে তালিকা নিয়ে সারা রাজ্যে সন্ত্রাস করে বিজেপিকে বদনাম করছে এখন তারা। প্যারাটোপ লিডাররা তাদের চিহ্নিত করতে ভুল করেছে। ফলে এখন তারা এই সন্ত্রাস গোটা রাজ্যে করে চলেছে। পুলিশ ঠোঁটে জগন্নাথ।

রাজ্যবাসী কাছে আপিল করা হচ্ছে রাজ্যবাসী যাতে উৎসবের মেজাজে আগামী ২৫ নভেম্বর ভোট দিতে যায় বলে জানান বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন। ক্লাবগুলো আঘাত লাগা দরকার, কারণ বাইরের ছেলেরা আপনাদের এলাকায় গিয়ে মা-বোনদের সম্মানহানি করছে এবং সন্ত্রাস হচ্ছে, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন? আগামী দুদিন অন্তত নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন ক্লাব কর্তৃপক্ষরা। এই ধরনের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মানুষকে বের হয়ে আসা দরকার। এবং এগুলি প্রতিহত করে অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য বলেন বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন। রাজ্যে যা চলছে তা অঘোষিত যুদ্ধ। রাজ্যে এখন আর পলিটিক্যাল গ্রামার নেই। রাজ্যে কৃষ্টি-সংস্কৃতি নষ্ট করা হচ্ছে। প্যারাতোপ লিডার প্যারাসুট দিয়ে ত্রিপুরায় এসে নেমেছে। উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন তিনি। যিনি ত্রিপুরা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তবে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টি সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাকে গত ২১ নভেম্বর অবহিত করা হয়েছে। কারণ মানুষের জন্য রাজনীতি করে আসছি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলছি। বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেলতে এ ধরনের প্রতিবাদ নয়।

 রাজ্যে বিজেপি নিজে নিজে কপাল ঠুকছে বলে এগুলি বলা হচ্ছে। গণতন্ত্র শেষ কথা বলবে। ভোট ময়দানে নেমে নিজ বিধানসভা এলাকায় মানুষের পাশে দাঁড়াবেন। পুলিশ আধিকারিকের সাথে এ বিষয়ে কথা বলা হবে বলে জানান শ্রী বর্মন। তিনি আরো বলেন, ত্রিপুরার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব ছিল রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করার। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো এখন পর্যন্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কোন স্টেটমেন্ট নেই রাজ্যবাসী কাছে। উনার দরকার ছিল বলা এই ধরনের সন্ত্রাস ভারতীয় জনতা পার্টি বরদাস্ত করবে না। তবে উনার জেনে প্রয়োজন যায় দিন ভালো যায়, আসে দিন খারাপ। এমনকি রাজ্যের নির্বাচন কমিশনের পর্যন্ত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কোনো রিপোর্ট নেই।

দমবন্ধকর পরিস্থিতি রাজ্যে। গণতন্ত্র বলতে কিছু নেই। এমনভাবে প্রতিবাদী সুর ব্যক্ত করলেন সুদীপ রায় বর্মন। পাশাপাশি তিনি আরো বলেন তৃণমূল কংগ্রেসের খবরই রাখেন না। ত্রিপুরা রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে খবর রাখেন। আসন্ন নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রত্যেক মনোনীত প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়যুক্ত হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি। স্বশাসিত জেলা পরিষদ নির্বাচন এবং আসন্ন নির্বাচন থেকে দূরে রেখেছেন। বিগত সরকারের সময় ত্রিপুরা রাজ্যে আমাদের ইতিহাস আছে। কিন্তু বর্তমান নির্বাচনগুলিতে দল ডাকছে না। তাই দলের জন্য কাজ করতে পারছেন না বলে স্পষ্ট বলে দেন বিধায়ক আশীষ কুমার সাহা। দায়িত্বশীল কার্যকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। তাই বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এগিয়ে এসে কথা বলছেন। সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর যদি ৯০ শতাংশ প্রতিশ্রুতি পালন হয়ে থাকে তাহলে জনগণের উপর আস্থা থাকা দরকার বলে অভিমত ব্যক্ত করেন বিধায়ক আশীষ কুমার সাহা।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য