Thursday, January 16, 2025
বাড়িখেলা১০০ ওভারের ওয়ানডে শেষ ৩১ ওভারেই, অস্ট্রেলিয়ান দাপটে বিধ্বস্ত উইন্ডিজ

১০০ ওভারের ওয়ানডে শেষ ৩১ ওভারেই, অস্ট্রেলিয়ান দাপটে বিধ্বস্ত উইন্ডিজ

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,৬ ফেব্রুয়ারি: অভিষেক ম্যাচে ৪ উইকেট শিকারের পর বার্টলেট বলেছিলেন, তার কাছে সবকিছুই মনে হচ্ছে ‘প্রায় অবাস্তব।’ এবার ‘প্রায়’ ব্যাপারটিও আর থাকল না, পুরোপুরি পরবাস্তব অনুভূতি! চওড়া হাসিতে এই পেসার বললেন, ‘অবিশ্বাস্য’ লাগছে তার। দ্বিতীয় ম্যাচেও যে এই পেসার নিলেন ৪ উইকেট! সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৮ উইকেটে হারাল অস্ট্রেলিয়া। ওয়ানডেতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের এটি টানা দ্বাদশ জয়। অস্ট্রেলিয়ার ১ হাজারতম ওয়ানডে ছিল এটি। তাদের চেয়ে বেশি ওয়ানডে খেলেছে কেবল ভারত। তবে সবচেয়ে বেশি ৬০৯ জয় অস্ট্রেলিয়ারই। ক্যানবেরার মানুকা ওভালের উইকেটকে বলা হয় অস্ট্রেলিয়ার সেরা ব্যাটিং উইকেটগুলোর একটি। এই ম্যাচেও ব্যতিক্রম ছিল না। কিন্তু সেখানেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং মুখ থুবড়ে পড়ল ২৪.১ ওভারে ৮৬ রানে। সেই রান স্রেফ তুড়ি মেড়ে উড়িয়ে দিল অস্ট্রেলিয়া। জেইক-ফ্রেজার ম্যাকগার্ক ও জশ ইংলিসের ঝড়ে জিতে গেল তারা কেবল ৬.৫ ওভারেই। 

১৮৬ বলেই শেষ ম্যাচ। ওয়ানডে ইতিহাসের এর চেয়ে কম বলে শেষ হয়েছে আর স্রেফ ৫টি ওয়ানডে। অস্ট্রেলিয়ার মাঠে এটিই সবচেয়ে ছোট ওয়ানডে ম্যাচ। এই সিরিজের প্রথম ম্যাচেই অভিষেকে ১৭ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন বার্টলেট। চোটপ্রবণ শরীরের কারণে দ্বিতীয় ম্যাচে তাকে বিশ্রামে রাখা হয়। তৃতীয় ম্যাচে ফিরেই ২৫ বছর বয়সী পেসার নিলেন ২১ রানে ৪ উইকেট। ক্যারিয়ারের প্রথম দুই ওয়ানডেতেই চার উইকেট শিকার করা প্রথম অস্ট্রেলিয়ান বোলার তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে গতির ঝড় তুলে জাতীয় দলে আসা ল্যান্স মরিসও এ দিন তার ঝলক দেখান কিছুটা। তবে ৪.৩ ওভারে ২ উইকেট নেওয়ার পর সাইড স্ট্রেইনে মাঠ ছাড়েন তিনি। টস জিতে বোলিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়াকে ম্যাচের তৃতীয় ওভারেই উইকেট এনে দেন বার্টলেট। তবে সেটিতে ছিল ভাগ্যের ছোঁয়া। কেয়র্ন অটলির ব্যাটে লাগার পরও এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার। ব্যাটে বেশ ভালোভাবে লাগার পরও রিভিউ নেননি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান! এরপর লড়াইয়ের চেষ্টা করেন আলিক আথানেজ ও কেসি কার্টি। দশম ওভারে আক্রমণে এসেই উইকেটের দেখা পান মরিস। সেখানে অবশ্য কৃতিত্ব বেশি ফিল্ডারের। পয়েন্টে ডানদিকে লাফিয়ে অনেকটা গোলকিপারের মতো করে অবিশ্বাস্য রিফ্লেক্সে বল হাতে জমান মার্নাস লাবুশেন। অভিষেকে খরুচে বোলিংয়ে উইকেটশূন্য থাকা মরিস পান প্রথম উইকেটের স্বাদ। পরের ওভারেই ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক শেই হোপকে ফেরান শন অ্যাবট। টেডি বিশপের অভিষেক বিষিয়ে তুলে তাকে শূন্য রানে বোল্ড করেন মরিস। ওপেনিংয়ে নেমে লড়াই করতে থাকা আথানেজ ৬০ বলে ৩২ রান করে অ্যাডাম জ্যাম্পাকে উইকেট উপহার দেন আলগা শটে। 

পরে বার্টলেট ফিরে ধসিয়ে দেন ইনিংসের বাকিটা। ক্যারিবিয়ানদের ৮ ব্যাটসম্যান পারেননি দুই অঙ্ক ছুঁতে। শেষ ৬ উইকেট হারায় তারা ১৫ রানের মধ্যে। রান তাড়ায় স্রেফ তান্ডব চালান ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক ও ইংলিস। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের এই সময়ের আলোচিত তরুণ ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক আগের ম্যাচে অভিষেকে একটি করে চার ও ছক্কা মেরেই আউট হয়েছিলেন। এবার তিনি তুলাধুনা করে ছাড়েন ক্যারিবিয়ান বোলারদের। ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ১৮ বলে ৪১ রান করে আউট হয়ে যান ২১ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। তিনে সুযোগ পেয়ে অ্যারন হার্ডি বিদায় নেন ২ রানে। তবে ইংলিশ ১৬ বলে অপরাজিত ৩৫ রান করে ম্যাচ শেষ করে দেন দ্রুতই। ক্যারিয়ারের প্রথম দুই ম্যাচেই ম্যান অব দা ম্যাচ হওয়ার পাশাপাশি সিরিজ সেরাও বার্টলেট। অস্ট্রেলিয়াতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওয়ানডে জয় খরা পৌঁছে গেল টানা ২৮ ম্যাচে। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ওয়েস্ট ইন্ডিজ২৪.১ ওভারে ৮৬ (আথানেজ ৩২, অটলি ৮, কার্টি ১০, হোপ ৪, বিশপ ০, চেইস ১২, শেফার্ড ১, ফোর্ড ০, জোসেফ ৬, মোটি ০, টমাস ০*; বার্টলেট ৭১.-০-২১-৪, গ্রিন ৩-০-১৮-০, অ্যাবট ৪-০-১৪-১, মরিস ৪.৩-০-১৩-২, জ্যাম্পা ৫-০-১৪-২, সাদারল্যান্ড ০.৩-০-৫-০)। 

অস্ট্রেলিয়া৬.৫ ওভারে ৮৭/২ (ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক ৪১, ইংলিস ৩৫*, হার্ডি ২, স্মিথ ৬*; জোসেফ ৩-০-৩০-১, ফোর্ড ২-০-৪০-০, মোটি ১-০-১০-০, টমাস ০.৫-০-৭-১)। 

ফল: অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে জয়ী।

সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ৩-০তে জয়ী।

ম্যান অব দা মাচ: জেভিয়ার বার্টলেট।

ম্যান অব দা সিরিজ: জেভিয়ার বার্টলেট।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য