স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,৩১ জুলাই: চোটাঘাতের ক্ষেত্রে কপিল নিজে খেলোয়াড়ি জীবনে ছিলেন ক্রিকেট ইতিহাসের এক মহাবিস্ময়। ফাস্ট বোলার হলেও অবিশ্বাস্যভাবে ক্যারিয়ারে একবারও চোটের কারণে কোনো টেস্টে তাকে বাইরে থাকতে হয়নি। ১৩১ টেস্টের ক্যারিয়ারে একবারই কেবল একাদশের বাইরে থেকেছেন। তাকে সবার বিতর্কিতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছিল। তার শৃঙ্খলা ও নিবেদন তাই প্রশ্নাতীত। কিন্তু তার মনে প্রশ্ন জাগে এখনকার ক্রিকেটারদের নিয়ে। ওয়ানডে বিশ্বকাপ শুরু হতে খুব বেশি সময় আর বাকি নেই। চোটের কারণে ভারত সেরা দলকে নামাতে পারছে না একদমই। চোট নিয়ে মাঠের বাইরে আছেন জাসপ্রিত বুমরাহ, লোকেশ রাহুল, শ্রেয়াস আইয়ারের মতো ক্রিকেটাররা। সড়ক দুর্ঘটনায় লম্বা সময়ের জন্য ছিটকে গেছেন রিশাভ পান্ত।
দা উইক ম্যাগাজিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কপিল আলাদা করে প্রশ্ন তুললেন গুরুত্বপূর্ণ দুই ক্রিকেটার বুমরাহ ও পান্তকে নিয়ে। “বুমরাহর কি হয়েছে? এতটা বিশ্বাস নিয়ে সে কাজ করতে শুরু করেছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত যদি তাকে না পাওয়া যায় (বিশ্বকাপের বড় ম্যাচে)… তাহলে তাকে নিয়ে আমরা সময় নষ্ট করছি। রিশাভ পান্ত… এতটা দুর্দান্ত ক্রিকেটার, যে যদি থাকত, টেস্টে আমরা আরও ভালো করতাম।” ভারতের সাবেক ক্রিকেটারদের বড় অংশসহ বিশ্ব ক্রিকেটের অনেকেই এখন আইপিএলের সঙ্গে নানাভাবে সম্পৃক্ত থাকায় সেভাবে আঙুল তোলেন না। তবে কপিল এখানে বরাবরই ব্যতিক্রম। প্রশংসার পাশাপাশি খোলামেলা সমালোচনা করে ছাড়েন না তিনি। এবারও সেটির ব্যতিক্রম নয়।
“ইশ্বর দয়ালু… এমন নয় যে আমি চোট পাইন… এখন অবশ্য ক্রিকেটারদের বছরে ১০ মাসই খেলতে হয়। এদিক থেকেও ওদেরকে ‘বেনিফিট অব ডাউট’ দেওয়া যায়। তবে সবাইকে তো নিজের খেয়াল রাখতে হবে।” “আইপিএল অবশ্যই দারুণ কিছু, কিন্তু আইপিএল ক্রিকেটারদের নষ্টও করতে পারে। কারণ, ছোট কোনো ইনজুরি হলেও তারা আইপিএল খেলে। কিন্তু সামান্য ইনজুরি নিয়ে ভারতের হয়ে খেলে না। তখন বিশ্রাম নেয়। আমি একদম খোলামেলাভাবেই সব বলছি।” এখানে ক্রিকেট বোর্ডেরও বড় ভূমিকা দেখেন কপিল। তার পরামর্শ, দীর্ঘমেয়াদি সূচি প্রণয়ন করে যেন ক্রিকেটারদের ম্যাচ খেলানোর পরিকল্পনা করা হয়। “যদি ছোট ইনজুরি থাকে, তাহলে আইপিএলের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হলেই কেবল কেলতে পারে। ক্রিকেট বোর্ডেরও এই পর্যায়ে এসে বুঝতে হবে, কতটা ক্রিকেট তাদের খেলা উচিত। এটাই মূল কথা। আজকের দিনে বোর্ডের সম্পদ আছে, টাকা আছে, কিন্তু তিন-চার বছরের সূচি নেই। তার মানে ক্রিকেট বোর্ডের কোনো সমস্যা আছে।” “৩০ বছর আগের ব্যাপার বুঝতে পারি। তখন টাকা ছিল না। আরও টাকা লাগত, ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা এই ধরনের দলকে তাই আমন্ত্রণজানানো হতো। এখন তো আর বেশি টাকার দরকার নেই। এখন প্রয়োজন আরও ভালো ক্রিকেট। আইপিএলের আসর শেষ করা হচ্ছে টেস্ট ম্যাচের কেবল তিন দিন আগে। অথচ পরিকল্পনা করা উচিত তিন বছর আগে, পাঁচ বছর আগে থেকে। এজন্যই আমি অস্ট্রেলিয়াকে সমীহ করি।”