স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ৩০জুন: লর্ডস টেস্টের দ্বিতীয় দিনে অস্ট্রেলিয়ার ৪১৬ রানের জবাবে ইংল্যান্ডের শুরুটা হয় দারুণ। যথারীতি ‘বাজবল’ ঘরানার ব্যাটিংয়ে দ্রুত রান তুলতে থাকেন জ্যাক ক্রলি ও বেন ডাকেট। ওভারপ্রাত ৫ রানের বেশি তুলে ছুটতে থাকেন ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার। ৯১ রানের উদ্বোধনী জুটি থামে লায়নের বলে ক্রলি ৪৮ বলে ৪৮ রানে স্টাম্পড হলে। তবে দ্বিতীয় উইকেটেও একই গতিতে ছুটতে থাকেন ডাকেট ও অলিভার পোপ। চা বিরতির পর ফিল্ডিংয়ের সময় পায়ে টান লাগায় মাঠ ছাড়েন লায়ন, একটি প্রান্তে দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করছিলেন যিনি। উইকেট ততক্ষণে অনেকটাই ব্যাটিং সহায়ক। প্রথম দিনে ঘাসের ছোঁয়া থাকলেও দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশন নাগাদ তা সহজ হয়ে এসেছিল অনেকটা। আকাশে ছিল না মেঘ। কন্ডিশনও ছিল ব্যাটিং উপযোগী। অস্ট্রেলিয়ান বোলাররা বাতাসে ও পিচে, কোনোভাবেই মুভমেন্ট আদায় করতে পারছিলেন না।
এক পর্যায়ে অস্ট্রেলিয়ান পেসাররা বেছে নেন শর্ট বলের কৌশল। তাতেই কাজ হয় দারুণভাবে। সেঞ্চুরির দুয়ারে থাকা ডাকেট ৯৮ রানে ক্যাচ দেন হেইজেলউডের শর্ট বলে। ক্যামেন গ্রিনের শর্ট বলে পুল করে ধরা পড়ন ৪২ রান করা পোপ। আগের টেস্টে দুর্দান্ত ব্যাট করা জো রুট এবার ১০ রানে কাটা পড়েন মিচেল স্টার্কের বাউন্সারে। ১ উইকেটে ১৮৮ রানে থাকা দল ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে ৩৪ রানের মধ্যে। হ্যারি ব্রুক ও বেন স্টোকস পরে ৫৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিন শেষ করেন। তবে দিনের শেষে বিবিসি স্পোর্টসের অ্যাশেজ ডেইলিতে আলোচনায় শর্ট বলের শিকার তিন ব্যাটসম্যানকে একহাত নেন ভন। “আমার মনে হয়, আমাদের বাস্তব বোধসম্পন্ন হতে হবে, বিনোদনের সঙ্গে আমরা স্টুপিডিটি মেশাতে পারি না। প্রথম ১৮২ রানের ক্ষেত্রে এমন এক ইংল্যান্ড দলকে দেখেছি, যারা ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ বিনোদনদায়ী ক্রিকেট খেলেছে, কারণ, তারা যথাযথ ক্রিকেট শট খেলেছে। অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের, পেসারদেরকে তারা খেলেছে দারুণ ব্যালান্স এবং সামনের ও পেছনের পায়ে স্কোরিংয়ের দারুণ সব পথ বেছে নিয়ে।”
ভনের মতে, ওই সময় পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু পরে অস্ট্রেলিয়া কৌশল বদলের পর ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা অতি দুঃসাহসী হতে গিয়ে নিজেদের পতন ডেকে এনেছেন বলে মনে করেন ২০০৫ অ্যাশেজজয়ী অধিনায়ক। “অস্ট্রেলিয়া অনেক সহজ বল দিয়েছে তখন। বল পার্শ্বত কিছু করছিল না। বলের লাইনে খেলা ছিল সহজ। বেন ডাকেট, জ্যাক ক্রলি, অলি পোপরা দারুণ খেলছিল। আমার কাছে, সেটাই হলো বিনোদন।” “এরপর ন্যাথান লায়ন খুঁড়িয়ে মাঠ ছাড়ার পর, তাদের কৌশল বদলাতেই হতো। প্যাট কামিন্সের সোমনে একটি পথই ছিল। কারণ বাতাসে বল কিছু করছিল না, সিম মুভমেন্ট ছিল না। সে তাই শর্ট বলের কৌশল নেয় এবং পরের ঘণ্টাখানেক সময়ে যা হয়েছে, তা ছিল পুরোপুরি স্টুপিডিটি (ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের)।” এই টেস্টের আগেও ভন বলেছিলেন, ‘বাজবল’ ঘরানা তার ভালো লাগলেও দলকে আরেকটু স্মার্ট ক্রিকেট খেলতে দেখতে চান তিনি। এ দিন একই কথা শোনা গেল আরেক ইংলিশ গ্রেট ডেভিড গাওয়ারের কণ্ঠে। “বাজবল ক্রিকেটকে আরও বেশি স্মার্ট দেখতে চাই আমি। ভালো খেলতে থাকার সময় ব্যাটসম্যানরা ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে আউট হয়ে যাচ্ছে বারবার, এটা দেখতে দেখতে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছি।”