স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২০ জুন : গালওয়ানে ভারত-চিন সংঘাতের পর প্রথমবার চিন সফরে যাচ্ছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। জানা যাচ্ছে, আগামী সপ্তাহের ২৫ থেকে ২৭ জুন চিনের কিংদাও শহরে হতে চলেছে এসসিও (SCO) বৈঠক। সেই বৈঠকে যোগ দিতেই রাজনাথের এই সফর। ভারতের পাশাপাশি এই বৈঠকে অংশ নেবেন, চিন, পাকিস্তান, রাশিয়া, ইরান, বেলারুশ, কাজাখিস্তান, কিরগিজস্তান, তাজাকিস্তান ও উজবেকিস্তান-সহ মোট ১০ দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তবে এসসিও বৈঠকের পাশাপাশি ভারত-চিন সম্পর্ক, সন্ত্রাসবাদ ও সাম্প্রতিক যুদ্ধপরিস্থিতিতে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করতে কূটনৈতিকভাবে এই সফরের গুরুত্ব অনেকখানি।
২০২০ সালে গালওয়ানে সীমান্ত ইস্যুতে ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত সংঘাত চরম আকার নিয়েছিল। এরপর টানা ৫ বছর ধরে দফায় দফায় বৈঠকের পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে দুই দেশের সম্পর্ক। গালওয়ানের পর ডেমচক, দেপসাংয়ে সেনা মোতায়েন করেছিল দুই দেশ। সেই সেনা প্রত্যাহারও শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, অতীতের দুঃসময়কে দূরে সরিয়ে চিনের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতিতে রাজনাথের এই সফর। প্রতিরক্ষামন্ত্রকের তরফে জানা যাচ্ছে, এই সফরে দুই দেশের ফের বিমান চলাচল চালু, ভিসা, নদীগুলির জলবণ্টন-সহ একাধিক বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।
এর পাশাপাশি অপারেশন সিঁদুরের পর সন্ত্রসাবাদ নিয়ে চিনকে অবগত করানোও উদ্দেশ্য কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর। ভারতের মাটিতে সন্ত্রাসবাদের মদতদাতা পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দিয়েছে ভারত। দুই দেশের সংঘাতে চিন সরাসরি কাউকে সমর্থন না করলেও পাকিস্তান হয়ে চিনা অস্ত্রই ধেয়ে এসেছিল ভারতে। ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তা প্রতিহত করলেও, চিনের পাক-প্রীতি যে পরোক্ষে সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন এবং এই ঘটনা যে ভারত ভালো চোখে দেখবে না তা বেজিংকে বুঝিয়ে দিতে চান রাজনাথ।
শুধু তাই নয়, মধ্যপ্রাচ্যের ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে চলতে থাকা যুদ্ধে রাশিয়া, চিন, পাকিস্তান-সহ দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ দেশ সরাসরি ইজরায়েলের বিরোধিতা করে ইরানের পক্ষ নিয়েছে। সেখানে ভারতের নীতি কিছুটা হলেও ভিন্ন। ভারতের কাছে ইজরায়েল ও ইরান দুই দেশই বন্ধু রাষ্ট্র। এই মঞ্চকে ব্যবহার করেই ভারতের অবস্থান বিশ্বের কাছে স্পষ্ট করে দিতে পারেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। ভারতের বিদেশনীতি যে সম্পূর্ণ স্বাবলম্বী এবং ভারত আমেরিকা বা ইজরায়েলের পক্ষ নিচ্ছে না সে বার্তাও স্পষ্ট করে দেবেন রাজনাথ। সব মিলিয়ে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে রাজনাথ সিংয়ের এই সফর কূটনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।