স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৫ ফেব্রুয়ারি : ‘ফ্যাসিবাদী’ দল নয় বিজেপি। নরেন্দ্র মোদির সরকারকেও ‘নব্য ফ্যাসিবাদী’ বা ‘নিও ফ্যাসিস্ট’ বলা যাবে না। এপ্রিলের পার্টি কংগ্রেসের আগে রাজনৈতিক প্রস্তাবে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে এই বার্তা পাঠিয়েছে সিপিএম। যা নিয়ে এবার দ্বন্দ্ব বামফ্রন্টের অন্দরেই। অন্য বাম শরিকদের দাবি, অবিলম্বে সিপিএমের এই অবস্থান সংশোধন করে নেওয়া উচিত।
এপ্রিলে কেরলে পার্টি কংগ্রেস সিপিএমের। তার আগে দলের অবস্থান স্পষ্ট করতে বিভিন্ন রাজ্যের কর্মীদের উদ্দেশে একটি ‘নোট’ পাঠিয়েছে দেশের বৃহত্তম বামপন্থী দল। ওই নোটে বলা হয়েছে, “এখনই বিজেপি বা নরেন্দ্র মোদিকে ফ্যাসিবাদী বলা যাবে না। কেন্দ্রের সরকারকে নিও ফ্যাসিবাদী সরকারও বলার সময় আসেনি। বিজেপি এবং কেন্দ্র সরকারের কাজকর্মে নব্য-ফ্যাসিবাদী বৈশিষ্ট্য দেখা গেলেও এখনই মোদির অধীনে দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে নব্য-ফ্যাসিবাদী রূপ নিয়েছে, সেটা বলার সময় আসেনি।”
তবে একই সঙ্গে বিজেপি-আরএসএসের সরকারের কার্যকলাপের থেকে সতর্ক করা হয়েছে। সিপিএমের ওই নোটে বলা হয়েছে, “বিজেপি-আরএসএস যদি নিয়ন্ত্রণে না থাকে, তাহলে ‘হিন্দুত্ববাদী কর্পোরেট কর্তৃত্ববাদ’ প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। আগামী দিনে যা নব্য-ফ্যাসিবাদে পরিণত হতে পারে। দলের নোটে বিজেপিকে ‘ফ্যাসিবাদী আরএসএসের রাজনৈতিক ফ্রন্ট’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। তবে ভারতীয় রাষ্ট্র বা সরকারকে ফ্যাসিবাদী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি।
সিপিএমের এই এই নোট নিয়ে দ্বিমত বামফ্রন্টের অন্দরেই। সিপিআই এবং লিবারেশনের মতো দলগুলি বরাবর বলে আসছে মোদি সরকার ফ্যাসিবাদী। লিবারেশনের বক্তব্য, ১০ বছরের মোদি শাসনে দেশে ইতিমধ্যেই ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত। সিপিআইয়ের বক্তব্যও অনেকটা একইরকম। সিপিআই বলছে, “অবিলম্বে সিপিএমের এই অবস্থান থেকে সরে আসা উচিত।” কংগ্রেস আবার সরাসরি আক্রমণ করছে সিপিএমকে। কেরল কংগ্রেসের এক নেতা বলছেন, “সিপিএমের এই বোধোদয় থেকেই বোঝা যাচ্ছে সিপিএম এবার সরাসরি মোদির সঙ্গে জোট করে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।” বস্তুত এ রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে, রাজ্যে বিজেপি এবং বামেদের একটি অঘোষিত আঁতাঁত রয়েছে। মোদি সরকারের প্রতি সিপিএমের এই নরম মনোভাব সেই আঁতাঁত তত্ত্বকেই নতুন করে জাগিয়ে তুলবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।