Tuesday, March 25, 2025
বাড়িজাতীয়সরযূতে বিসর্জন রামমন্দিরের পূজারির দেহ! জলদূষণের অভিযোগে সোচ্চার বিশেষজ্ঞরা

সরযূতে বিসর্জন রামমন্দিরের পূজারির দেহ! জলদূষণের অভিযোগে সোচ্চার বিশেষজ্ঞরা

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৫ ফেব্রুয়ারি : ভয়ংকর। অমানবিক। মধ্যযুগীয়। নাকি অশিক্ষার পরিণতি! ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে ঘটনাটিকে কীভাবে বর্ণনা করা যায়– তা হয়তো বলা সম্ভব নয়। যে দেশ বিধবা বিবাহ চালু, বাল্যবিবাহ রদের মতো ঘটনার ইতিহাস বহন করে চলেছে, সেই দেশেই আরও স্পষ্ট করে বললে, উত্তরপ্রদেশের এক ঘটনায় স্তম্ভিত গোটা দেশ। গোটা বিশ্ব।

অযোধ্যার রামমন্দিরের প্রধান পুরোহিত আচার্য সত্যেন্দ্র দাসকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সরযূ নদীতে ‘জলসমাধি’ দিয়ে সমাহিত করা হয়েছে। বুধবার ব্রেন স্ট্রোকে ৮৫ বছর বয়সে তিনি মারা যান। দাসের মরদেহ তাঁর বাসভবন থেকে পালকিতে করে সরযূ নদীর তীরে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তঁাকে তুলসীদাস ঘাট থেকে নিয়ে গিয়ে জলে সমাহিত করা হয়।
ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, নৌকা করে এনে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেহটিকে মাঝ নদীতে ফেলে দেওয়া হল। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিকেলে, তাঁর দেহ রথে করে শোভাযাত্রার মাধ্যমে শহর প্রদক্ষিণ করানো হয়। তাঁর উত্তরসূরি প্রদীপ দাস সংবাদমাধ্যমকে বলেন, রামানন্দী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য অনুসারে, দাসকে জলে সমাধি দেওয়া হয়। ‘জলসমাধি’র অংশ হিসাবে, দেহটি নদীর মাঝখানে ফেলার আগে ভারী পাথর বেঁধে দেওয়া হয়। যাতে সেটি কোনওভাবেই ভেসে উঠতে না পারে।

আজকের দিনে এভাবে জলসমাধি দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। এ প্রসঙ্গে নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র বলেন, এর ফলে জলের দূষণ ভয়ংকর হবে। কারণ, কোনও দেহ জলে ফেলে দিলে জৈব রাসায়নিক অক্সিজেনের চাহিদা বাড়বে। ফলে জলের গুণগত মান কমতে থাকবে। এ ছাড়াও দেহটিতে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধবে। যা জলের ক্ষতি করবে। জলদূষণের মাত্রা বাড়াবে। বিশেষজ্ঞ রুদ্রের মতে, আজকের দিনে এমন ঘটনা সত্যিই আশ্চর্যের।

অন্যদিকে, রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বামী মুরালীধরানন্দ মহারাজ বলেন, ”অতীতে এমন জলসমাধির প্রচলন ছিল। আমিও এমন কয়েকটির ঘটনার সাক্ষী ছিলাম। কিন্তু, পরবর্তীতে তা নিষিদ্ধ করা হয়। কেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তার সঠিক কারণ আমার জানা নেই। তবে, এখন এমন ঘটে না। বহু দিন আগেই  জলসমাধি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আবার কী কারণে, এমন ঘটনা ঘটল সেটা ওঁরাই বলতে পারবেন।” প্রসঙ্গত, নির্বানী আখড়ার একজন সদস্য হিসাবে ২০ বছর বয়স থেকেই আধ্যাত্মিক সেবায় জীবন উৎসর্গ করেছিলেন আচার্য সত্যেন্দ্র দাস।

এ ভাবে জলসমাধির খবর সামনে আসতেই সুর চড়িয়েছে বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদি সরকার যেখানে জলদূষণ রোধের নামে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে, সেখানে এভাবে দেহ জলে ফেলে জলদূষণ করা হচ্ছে। আর বিজেপি নেতারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। এটা অত্যন্ত দুঃখের।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য