স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১০ ফেব্রুয়ারি : সব ভালোর মন্দ দিকও থাকে। মহাকুম্ভের জনপ্রিয়তার জেরে সোমবার ৩০০ কিলোমিটার লম্বা নাভিশ্বাস ওঠা যানজটের সাক্ষী হল প্রয়াগরাজ। যত দূর চোখ যায় কিলবিল করছে গাড়ি, কেউ দাঁড়িয়ে থাকতে রাজি নয়। ফলে লাগাতার হর্ন আর চিৎকার। যদিও তাতে করে লাভ হচ্ছে না কারও। এই ঘটনায় আরও একবার উত্তরপ্রদেশ সরকারের দিকে আঙুল উঠল। মহাকুম্ভে কোটি মানুষের ভিড় হবে, একথা জানা সত্ত্বেও কেন সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হল না? ব্যবস্থাপনার ত্রুটির জেরে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড়’ যানজটে পড়ে নাজেহাল হলেন পুণ্য়ার্থীরা। সব মিলিয়ে আগুন লাগা, পদপিষ্টের ঘটনার পর মহাকুম্ভের মহাযানজট নিয়ে ফের অস্বস্তিতে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
মনে করা হচ্ছিল যে বসন্ত পঞ্চমীর অমৃতস্নানের পরে মহাকুম্ভে ভিড় কমবে, যদিও উলটো ঘটনা ঘটছে। লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী নতুন করে কুম্ভের উদ্দেশে ট্রেন-বাস-বিমানে প্রয়াগরাজে হাজির হচ্ছেন। এর জেরেই নজিরবিহীন যানজটের সাক্ষী হল উত্তরপ্রদেশ। লম্বা লাইনে ছোট, বড় যাত্রিবাহী গাড়ির পাশাপাশি দেখা গেল পণ্যবাহী লরি, ট্রাক, এমনকি অ্যাম্বুল্যান্সও ফেঁসে গিয়েছে ভয়ংকর গাড়ির জটে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার পর অনেকেই বাধ্য হয় ঘরমুখো হন। কর্তব্যরত পুলিশদের বলতে শোনা যায়, “দয়া করে আর এগোনোর চেষ্টা করবেন না। ফিরে যান!”
এক সময় বিভিন্ন জেলায় নির্দেশ পাঠিয়ে পুলিশ প্রয়াগরাজের উদ্দেশে আসা গাড়িগুলিকে আটকায়। এমনকী প্রতিবেশী রাজ্য মধ্যপ্রদেশেও একই নির্দেশিকা পাঠানো হয়। যাতে করে ভিন রাজ্যের গাড়ি যানজট বাড়িয়ে না দেয়। এর পরেও অবশ্য ৩০০ কিমি যানজট এড়ানো যায়নি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যানজটে আটকে পড়া পুণ্যার্থীরা কেউ কেউ আট থেকে ১২ ঘণ্টা অবধি অপেক্ষা করছেন। অনেকের বক্তব্য এটা ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় যানজট’। ভয়ংকর জটে আটকে পড়া এক ভুক্তভুগির বক্তব্য, ৪৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও যানজট কাটছে না। ৫০ কিমি ডিঙোতে ১২ ঘণ্টা লাগছে। প্রয়াগরাজমুখী পথে যানজটে বারাণসী, লখনউ এবং কানপুরও থমকে গিয়েছে।
এদিকে ভিড়ে চিড়েচ্য়াপ্টা অবস্থা প্রয়াগরাজ সঙ্গম স্টেশন চত্বরে। সব দিক বিবেচনা করে শুক্রবার পর্যন্ত প্রয়াগরাজ সঙ্গম স্টেশন বন্ধ রাখা হচ্ছে। বিরাট জ্যামের ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে। যার পর শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তর্জা। আসরে নেমেছেন সমজাবাদী পার্টি প্রধান অখিলেশ যাদব। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন, যানজটে আটকে পড়া ক্ষুধার্ত, তৃষ্ণার্ত, ক্লান্ত তীর্থযাত্রীদের মানবিক দৃষ্টিকোণ দিয়ে দেখা উচিত। পাশাপাশি এসপি প্রধানের কটাক্ষ, আগুন লাগা, পদপিষ্টে মৃত্যু এবং যানজটের ঘটনায় স্পষ্ট যে মহাকুম্ভ আয়োজনে ব্যর্থ হয়েছে যোগী সরকার।