স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ৩১ মার্চ : সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ৭ এপ্রিল সোনম ওয়াংচুকের ‘পশমিনা মার্চ’-এর পরই লাদাখ কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে পারে অ্যাপেক্স বডি লে । ২০১৯ সালে সংসদে জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠনের পর লাদাখ ও কারগিল জেলায় তৈরি হয় দুটি সংগঠন। লে-তে তৈরি হয় এবিএল। কারগিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স কাজ করে কারগিলে। অরাজনৈতিক এই দুই সংগঠন মূলত লাদাখের দুই অংশের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি। যাদের মূল দাবি হল, লাদাখকে ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্ত করা এবং পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া।
নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহের হাত ধরে নতুন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি হওয়ার পর থেকে বেশ কয়েক দফায় নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনাও করেছে এবিএল এবং কেডিএ । যার শেষটি ছিল ৪ মার্চ। সেদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাসভবনে হওয়া বৈঠকের পর থেকেই সোনম ওয়াংচুকের নেতৃত্বে শুরু হয়েছে আন্দোলন।
ওয়াংচুকের আন্দোলন পরবর্তী অধ্যায়ে দেশের উত্তরতম লোকসভা কেন্দ্রে যথেষ্ট চাপে বিজেপি। সাংসদ জাময়াং শেরিং নামগিয়াল, লাদাখের বিজেপি সভাপতি ফুনচক স্টানজিন প্রত্যেকের গলাতেই একই ধরনের সুর–আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কারা জিতবে, বলা মুশকিল। তবে লে শহরের বেশিরভাগ মানুষের যা ভাবগতিক, তাতে বড় কোনও অঘটন না ঘটলে, এবার শীতল মরুভূমিতে পদ্ম ফোটার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। হাড়হিম করা বাতাস এই খবর বয়ে নিয়ে এসেছে লে বাজারের ঠিক সামনে কংগ্রেসের লে জেলা কমিটির দপ্তরেও। হাসি হাসি মুখে কংগ্রেসের মুখপাত্র শেরিং নামগিয়াল বলছিলেন, “ওদের উপর সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ। যার ফল ভোট মেশিনে পড়বেই।” কিন্তু তাঁদের হাসি থাকবে তো? বিকেলের দিকে এবিএলের কয়েকজন সদস্য উপস্থিত হন সোনম ওয়াংচুকের আন্দোলন মঞ্চে। যেখানে বর্তমানে দশদিনের অনশন করছেন লাদাখের মহিলারা। সেখানেই এবিএলের অন্যতম শীর্ষনেতা সেরিং দোরজে লাকরুক বলছিলেন, “বিজেপির উপর স্থানীয় মানুষ ক্ষুব্ধ। কংগ্রেসকেও দীর্ঘদিন সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ওরা এখনও প্রার্থী ঠিক করে উঠতে পারেনি। তাই আমরা ভাবছি, নিজেদের লড়াই নিজেরাই লড়ব। আসন্ন নির্বাচনে এবিএল অংশ নিতে পারে। ৭ এপ্রিল পশমিনা মার্চ হোক। তার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।”
লাদাখ লোকসভা কেন্দ্রে মোট ভোটার প্রায় এক লক্ষ ৮২ হাজার। যার মধ্যে লাদাখে ৮৮ হাজার। বাকি ৯৪ হাজার কারগিলে। অ্যাপেক্স বডি লের আন্দোলনে কতখানি সাহায্য করবে কেডিএ, কংগ্রেসই বা কী করবে, নজর রাখতে হবে এই দিকগুলিতেও। কংগ্রেসের বর্তমানে সবথেকে বড় মাথাব্যথা লে না কারগিল, কোন এলাকা থেকে প্রার্থী বাছাই করা হবে, তা নিয়ে। কারণ যে অঞ্চল প্রতিনিধি পাবে না, সেখানে নির্দল প্রার্থী দাঁড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। একমাত্র নির্দল ও কংগ্রেসের মধ্যে ভোট কাটাকুটি বড় পর্যায়ে হয়ে গেলে, তবেই লাদাখে ফুটতে পারে পদ্ম। এই আশাই এখন করছে বিজেপি নেতৃত্ব।