Saturday, July 27, 2024
বাড়িজাতীয়মিজোরামে ভোটার তালিকা থেকে ৬ হাজারের বেশি ব্রু ভোটারের নাম কর্তন

মিজোরামে ভোটার তালিকা থেকে ৬ হাজারের বেশি ব্রু ভোটারের নাম কর্তন


আইজল, ১৯ জুলাই (হি.স.) : মিজোরামে ভোটার তালিকা থেকে ৬ হাজারের বেশি ব্রু ভোটারের নাম কেটে দেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালে ব্রু–দের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক চুক্তির পর ত্রিপুরায় বসতি স্থাপনের জন্য তাঁদের নাম রাজ্য ভোটার তালিকা থেকে কেটে ফেলা হয়েছে।

মিজোরামের নির্বাচন দফতর সূত্রে জানা গেছে, রাজ্যের তিন জেলা যথাক্ৰমে মামিত, কোলাশিব এবং লুংলেই–এর নয়টি বিধানসভা কেন্দ্রের ছয় হাজারের বেশি ব্রু ভোটারের নাম ছাটাই করা হয়েছে।

সূত্ৰ জানিয়েছে, আগামী ২ আগস্ট খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর ব্রু ভোটারদের চূড়ান্ত পরিসংখ্যান নিশ্চিত করা হবে। বর্তমান সংশোধনী প্রক্রিয়ার পর আগামী ৪ অক্টোবর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হওয়ার কথা।

প্ৰসঙ্গত, ২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে ত্রিপুরায় ব্রু শরণার্থীদের পুনর্বাসনের ব্যাপারে ওই রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদন হয়েছে। ওই চুক্তির বলে ত্ৰিপুরায় আশ্রিত ৫,৪০০ রিয়াং পরিবারের ৩৪ হাজার উদ্বাস্তুর স্থায়ী পুনর্বাসন হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকার ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে৷ প্রত্যেক পরিবার পিছু এককালীন চার লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট করা হবে, যা দু’বছর পর নগদে পাওয়া যাবে। এছাড়া দু-বছর যাবৎ প্রতিটি পরিবারকে নিঃশুল্ক রেশনের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি মাসিক ৫,০০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে৷ শুধু তা-ই নয়, প্রত্যেকটি পরিবারের জন্য রাজ্য সরকারের তরফে দেড় গণ্ডা করে ভূমির উপর দেড় লক্ষ টাকা ব্যয় করে গৃহনির্মাণ করে দেওয়ার ত্রিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল।

ওই চুক্তি সম্পাদনের পর ইরোনেট (ইআরও-নেট)-এর মাধ্যমে ত্রিপুরা রাজ্য নির্বাচন কমিশন ব্রু ভোটারদের নাম ভোটার তালিকা থেকে ছেঁটে ফেলার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিল। কিন্তু মিজোরামের প্রধান নির্বাচন আধিকারিক পদে মধুপ ব্যাস দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজ্যের নির্বাচন দফতরের প্যান্ডিং সব কাজ দ্ৰুত শেষ করতে পদক্ষেপ নেন।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, ১৯৯৭ সালের অক্টোবর মাসে মিজোরামের মামিথ জেলার দুয়াপায় মিজো বনরক্ষীকে নৃশংসভাবে খুন করেন ব্রু উগ্রবাদীরা৷ তার পর থেকে মিজোরামে রিয়াংদের ওপর অত্যাচার শুরু হয়৷ বহু ব্রু গ্রাম মিজোদের হিংসার আগুনে ছাই হয়ে গিয়েছিল৷ তখন আত্মরক্ষায় ভিটেমাটি ছেড়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মিজোরামের ব্রু জনগোষ্ঠী ত্রিপুরায় আশ্রয় নিতে শুরু করেন৷ মিজোরামের মামিথ, কোলাশিব এবং লুংলেই জেলা থেকে হাজার হাজার শরণার্থী ত্রিপুরার কাঞ্চনপুর এবং পানিসাগরে অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নেন৷ মানবিকতার খাতিরে ত্রিপুরায় মিজোরামের ব্রু জাতিগোষ্ঠীর অসহায় পরিবারগুলিকে আশ্রয় ও নিরাপত্তা প্রদান করে তদানীন্তন রাজ্য সরকার৷

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য