কলকাতা, ২৮ জুলাই (হি. স.) : প্রত্যাশিত ভাবেই বৃহস্পতিবারের বারবেলায় শাস্তির খাঁড়া নামল এসএসসি দুর্নীতিতে গ্রেফতার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপর। রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরেই এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাঁকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল।
পার্থবাবুর অধীন তিনটি দফতরই আপাতত মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকবে। সেই মর্মেই রাজভবনের অনুমোদন অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নবান্ন। অর্থাৎ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা রাজ্যপালকে জানিয়েছেন, পার্থবাবুকে আর মন্ত্রিত্বে রাখা হচ্ছে না। তাঁর অধীন দফতরগুলি তিনিই দেখবেন। তার পরেই রাজ্যপালের তরফে ওই বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়।
পার্থকে গ্রেফতারের দিনেই সাংবাদিক সম্মেলন করে তৃণমূল জানিয়ে দেয়, আদালতে দোষী প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে দল। দু’দিন আগে স্বয়ং মমতাও বঙ্গসম্মান অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় প্রায় একই কথা বলেন। মমতা এবং দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তখন বুঝিয়েছিলেন, ‘আপাতত’ পার্থকে দলীয় পদ বা মন্ত্রিত্ব থেকে সরানো হচ্ছে না। বিরোধীরা অবশ্য পার্থবাবুকে মন্ত্রিসভা থেকে বহিষ্কারের দাবিতে সরব হন। এমনকি, তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীরও ইস্তফার দাবি তোলেন। তৃণমূলের অন্দরেও পার্থবাবুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠছিল। কিন্তু কেউই এ নিয়ে প্রকাশ্যে নিজেদের মতামত জানাননি বৃহস্পতিবারের আগে পর্যন্ত। ঘটনাচক্রে, বুধবার রাতেই ঘটে আর এক প্রস্ত নাটকীয় ইডি অভিযান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের দিকে নজর ছিল গোটা রাজ্যের। এসএসসি দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার হয়ে ইডি হেফাজতে থাকা পার্থকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানোর বিষয়ে কি কোনও আলোচনা করবেন মমতা? কিন্তু ওই বৈঠকে মমতা পার্থবাবুকে নিয়ে কোনও কথাই বলেননি। মাত্র ১৫ মিনিটে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষ হয়ে যায়। নবান্ন সূত্রের খবর, রাজভবনকে বৃহস্পতিবার সকালেই বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই মতোই বিষয়টি এগিয়েছে।
প্রসঙ্গত, কোনও মন্ত্রীকে মন্ত্রিসভা (রাজ্য বা কেন্দ্রীয়) থেকে বরখাস্ত করতে গেলে প্রাথমিক ভাবে সংশ্লিষ্ট দলকে সেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। দল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে তা মুখ্যমন্ত্রীকে (কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীকে) জানায়। তখন মুখ্যমন্ত্রী তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে সতীর্থ মন্ত্রীদের সে বিষয়ে অবহিত করেন। তার পরে রাজ্যের ক্ষেত্রে রাজ্যপালের কাছে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির কাছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীকে বরখাস্ত করার জন্য আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠান। তবে পার্থবাবুর ক্ষেত্রে দলের তরফে আনুষ্ঠানিক সুপারিশের আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতার তরফে ওই সিদ্ধান্ত এবং সুপারিশ রাজভবনে পাঠিয়েছেন।