স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৭এপ্রিল : ১৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের দিকে তাক করে রেখেছে পাকিস্তান। এমনটাই জানালেন সে দেশের মন্ত্রী হানিফ আব্বাসি। সম্প্রতি একটি সাংবাদিক বৈঠক থেকে ভারতের উদ্দেশে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, ভারত যদি জল বন্ধ করে, তবে যুদ্ধ হবে। তার জন্য ভারতকে তৈরি থাকতে হবে। মন্ত্রীর দাবি, পাকিস্তানের বিভিন্ন অংশে গোপন ডেরায় ক্ষেপণাস্ত্র মজুত রাখা হয়েছে। ১৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র রাখা আছে শুধু ভারতের জন্যই। সেগুলির অবস্থান সম্পর্কে খুব বেশি কেউ অবহিত নন।
ভারতের প্রসঙ্গ উঠলে হানিফ বলেন, ‘‘আমাদের ঘাঁটিতে অনেক ক্ষেপণাস্ত্র মজুত রাখা আছে। আমরা সেগুলি রেখে দিয়েছি শুধু হিন্দুস্তানের জন্যই। যে ১৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র আমাদের কাছে আছে, তা তো শুধু মডেল হিসাবে রাখা হয়নি। আপনাদের কোনও ধারণা নেই, পাকিস্তানের কোন কোন প্রান্তে এসব ক্ষেপণাস্ত্র রাখা হয়েছে।’’
পাকিস্তানের কাছে যে ক্ষেপণাস্ত্র মজুত রয়েছে, ভারত তা জানে, দাবি পাক মন্ত্রীর। তাঁর বক্তব্য, এই ক্ষেপণাস্ত্রের ভয়েই এখনও পাকিস্তান আক্রমণ করতে পারছে না ভারত। মন্ত্রী নয়াদিল্লির উদ্দেশে এর পর হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, ‘‘আমি আবার বলছি। এই সমস্ত ক্ষেপণাস্ত্র আমরা শো-কেসে তুলে রাখিনি। এগুলি তোমাদের দিকে তাক করা আছে। আরও কারও দিকে নয়। যদি তোমরা সিন্ধুর জল বন্ধ করার সাহস দেখাও, পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের জন্যেও তৈরি থেকো।’’
হানিফ জানিয়েছেন, নিজেদের সংস্থা এবং গোয়েন্দাদের ব্যর্থতা ঢাকতে জঙ্গি হামলায় পাকিস্তানের উপর দোষারোপ করছে ভারত। আগে তাদের উচিত নিজেদের দোষ খোঁজা। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথমে নিজের কাজের জবাবদিহি করো। আমাদের দিকে আঙুল তোলার আগে নিজেদের ত্রুটি স্বীকার করো। আমি দেশকে এবং সারা বিশ্বকে বলতে চাই, ওরা আমাদের ভয় দেখিয়েছে। আমরা পাল্টা দিয়েছি।’’
জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে তাতে। তাঁদের মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় এবং এক জন নেপালি নাগরিক। এই ঘটনার পর পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান পাল্টা বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে, সিন্ধুর জল বন্ধ হলে তা ‘যুদ্ধ’ হিসাবে দেখা হবে। এর পর তারা ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ এবং ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধের কথাও ঘোষণা করে। পাকিস্তানের হুঁশিয়ারিতে তেমন কাজ হয়নি। আনুষ্ঠানিক ভাবে চিঠি দিয়ে নয়াদিল্লি জানিয়ে দিয়েছে, সিন্ধু চুক্তি স্থগিত করা হচ্ছে। তার পরেই পাকিস্তানের দিক থেকে একের পর এক হুঁশিয়ারি আসছে। সে দেশের শাসক জোটের সহযোগী পাকিস্তান পিপল্স পার্টি (পিপিপি)-র নেতা বিলাবল ভুট্টো জ়ারদারি আগের দিন বলেছেন, ‘‘সিন্ধু আমাদের। হয় সিন্ধু নদ দিয়ে আমাদের প্রাপ্য জল আসবে, নয়তো সিন্ধু দিয়ে ওদের (ভারতীয়) রক্ত বইবে।’’ এ বার দেশের মন্ত্রী ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুঁশিয়ারি দিলেন। পাকিস্তান এবং ভারত উভয়েই পরমাণু শক্তিধর দেশ। পহেলগাঁও কাণ্ডের উত্তাপে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। এই ধরনের হুঁশিয়ারিতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে বলে আশঙ্কা কূটনীতিকদের।