স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২১ অক্টোবর: ইন্দোনেশিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে পার্লামেন্টে শপথ নিয়েই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করেছেন সাবেক জেনারেল প্রাবোয়ো সুবিয়ান্তো।ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে রোববার সকালে শপথ নেওয়ার মধ্য দিয়ে ৭৩ বছর বয়সী প্রাবোও বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর কাছ থেকে দেশ শাসনের ভার নিলেন। ইন্দোনেশিয়ার অস্টম প্রেসিডেন্ট হলেন তিনি।উদ্বোধনী ভাষণে সুবিয়ান্তো ইন্দোনেশিয়ায় দুর্নীতির মতো অভ্যন্তরীন নানা সমস্যা মোকাবেলা করা এবং দেশকে আরও স্বনির্ভর করে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছেন।
তিনি বলেন, “আমাদেরকে সবসময়ই একথা উপলব্ধি করতে হবে যে দেশের মানুষ স্বাধীন, সেটিই হচ্ছে একটি স্বাধীন দেশ। মানুষকে ভয়মুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, ক্ষুধামুক্ত, অজ্ঞতামুক্ত, নিপীড়নমুক্ত এবং দুর্ভোগমুক্ত থাকতে হবে।”এক ঘণ্টার এ ভাষণে সুবিয়ান্তো বলেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া সম্ভব ৫ বছরে। জ্বালনিতেও ইন্দোনেশিয়াকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। সুবিয়ান্তো বলেন, “মতামতের ভিন্নতা শত্রুতামুক্ত হতে হবে… অবিরাম লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।”পূর্বসূরি জোকো উইদোদোর উন্নয়ন কর্মসূচি সুবিয়ান্তো অব্যাহত রাখবেন বলে জানান। তিনি বলেন, “আমি এটাই চাই।”
প্রবোয়ো সুবিয়ান্তো গত ১৪ ফেব্রুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রায় ৬০ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন। গত ৯ মাস ধরে তিনি পার্লামেন্টারি জোট গঠনে ব্যস্ত সময় পার করেছেন।সাবেক সামরিক জেনারেল সুবিয়ান্তোর সঙ্গে বিদায়ী সরকারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। এবার নিয়ে তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট পদে লড়েছিলেন তিনি।সুবিয়ান্তোর মানবাধিকার রেকর্ড নিয়ে উদ্বেগ আছে। একারণে, তিনি একজন বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব। এক প্রজন্ম আগে সুহার্তোর স্বৈরশাসনের সময় সামরিক বাহিনীর প্রধান কমান্ডার ছিলেন সুবিয়ান্তো।ওই সময়ে তিনি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। ১৯৯০ এর দশকে এক পর্যায়ে তার যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
১৯৯৮ সালে ২০ জনের বেশি গণতান্ত্রিক আন্দোলনকর্মী শিক্ষার্থী (যাদের মধ্যে ১৩ জনের কোনও হদিস পাওয়া যায়নি) অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার কারণে তাকে অসম্মানজনকভাবে সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।ফলে সুবিয়ান্তোর আগমনে ইন্দোনেশিয়া আবারও অতীতের একনায়কত্বে ফিরে যাওয়ার বিপদের ঝুঁকিতে পড়ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।ইন্দোনেশিয়ার সব মানুষের সমৃদ্ধির জন্য লড়াই করার অঙ্গীকার নিয়ে এবারের নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছিলেন সুবিয়ান্তো।নির্বাচনে সুবিয়ান্তোর প্রতিপক্ষ হয়ে লড়েছিলেন- জাকার্তার সাবেক গভর্নর অ্যানিস বাসওয়েদান ও মধ্য জাভার সাবেক গভর্নর গাঞ্জার প্রানোও।