স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক ১৭ মার্চ : পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদী হামলা এবং অস্থিরতা ক্রমশ বাড়ছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় অন্তত ৫৭টি হামলার খবর পাওয়া গিয়েছে। প্রায় প্রত্যেকটির দায় স্বীকার করেছে কোনও না কোনও সন্ত্রাসবাদী বা বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন। তবে সরকারের দেওয়া ক্ষয়ক্ষতির পরিসংখ্যানের সঙ্গে তাদের পরিসংখ্যান মেলেনি।
পাকিস্তানে হামলাগুলির নেপথ্যে রয়েছে মূলত বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। এ ছাড়া, কিছু হামলার দায় স্বীকার করেছে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)। পাক সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দু’দিনে বিদ্রোহীদের হামলায় দেশের নানা প্রান্তে মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের। আহতের সংখ্যা ৪৬ জন। তবে বিএলএ বা টিটিপি-র দাবি অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে ১০০র গণ্ডি। বালোচিস্তানে জাফর এক্সপ্রেস অপহরণ সংক্রান্ত হতাহতের পরিসংখ্যান এর মধ্যে নেই। অভিযোগ, দু’দিনের হামলায় স্নাইপার থেকে শুরু করে গ্রেনেড বিস্ফোরণ কিংবা আইইডি বিস্ফোরণ, বিদ্রোহীদের নানা কৌশলের সাক্ষী থেকেছে পাকিস্তান।
রবিবার বালোচিস্তানের কোয়েটায় পাক সেনাবাহিনীর কনভয়ে হামলা হয়েছিল। সেনার তথ্য বলছে, তাতে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ২১ জন। এই ঘটনার দায় স্বীকার করে বালোচ বিদ্রোহীরা জানিয়েছেন, ৯০ জন পাকিস্তানি সেনা তাঁদের হামলায় নিহত হয়েছেন। ঘটনার পর পাক বাহিনী ওই এলাকায় হেলিকপ্টার এবং ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি শুরু করেছে। নিজেদের দাবির স্বপক্ষে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এনেছে বিএলএ। তাতে দেখা গিয়েছে, বিস্ফোরণে জ্বলে গিয়েছে সেনার বাস। সেখান থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর এক পুলিশকর্তা জানান, এটি আত্মঘাতী হামলা হতে পারে। কেউ বা কারা শরীরের সঙ্গে বিস্ফোরক বেঁধে সেনাবাহিনীর বাসের সামনে চলে আসেন। তার ফলেই বিস্ফোরণ। এর পর দূর থেকে কনভয় লক্ষ্য করে গুলিও চালানো হয়। এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ।
কোয়েটার এই হামলার পর পাক-আফগান সীমান্তের গারিগাল থেকে আরও একটি হামলার খবর প্রকাশ্যে আসে। তাতে ন’জন সেনা গুরুতর জখম হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে টিটিপি। দেশের নানা প্রান্তে আরও কয়েকটি হামলার দায় তারা স্বীকার করেছে।
কিছু দিন আগে ৪৪০ জন যাত্রী নিয়ে পেশোয়ারের দিকে যাওয়ার পথে বালোচিস্তানে জাফর এক্সপ্রেস অপহরণ করা হয়েছিল। বহু যাত্রীকে পণবন্দি করেছিলেন বিদ্রোহীরা। তাঁদের মধ্যে মহিলা এবং শিশুরাও ছিলেন। দীর্ঘ অভিযানের পর পাক সেনা জানায়, যাত্রীদের সকলকে নিরাপদে উদ্ধার করা গিয়েছে। নিহত হয়েছেন ৩৩ জন বালোচ বিদ্রোহী। পরে এই দাবি উড়িয়ে বিএলএ জানায়, তাদের হাতে ২১৪ জন যাত্রী বন্দি ছিলেন। তাঁদের হত্যা করা হয়েছে। এর পর পাক সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান নিয়েও ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে, পাকিস্তানে অশান্তিতে কোনও ছেদ পড়েনি।