স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৮ নভেম্বর : রাজধানীর বর্ডার গোল চক্কর এলাকায় বুলডোজার চালিয়ে বাড়িঘর ভেঙে দেওয়ার ঘটনার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে চিঠি লিখলেন বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে দাবি করলেন তাদের বিকল্প বাসস্থান সহ সমস্ত সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করে দেওয়ার। বিরোধী দলনেতা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, গত ১৭ নভেম্বর বিধায়ক সুদীপ সরকার ও রামু দাস এবং প্রাক্তন বিধায়ক রতন দাস সহ একটি প্রতিনিধি দল আমার আগরতলা পুর নিগমের অন্তর্গত আখাউড়া চেকপোস্ট সংলগ্ন বর্ডার-গোলচক্কর তথা দক্ষিণ রামনগর এলাকাটি পরিদর্শন যান। গত ক’দিন ধরে ঐ এলাকায় বিকল্প জাতীয় সড়ক নির্মাণের উদ্দেশ্যে রাস্তার পার্শ্ববর্তী খাস জমিতে ৬-৭ দশক ধরে বসবাসরত শ্রমজীবী অংশের গরীব মানুষের বাড়িঘরগুলি বুলডোজার দিয়ে ভাঙ্গা শুরু হয়েছে। তাদের একমাত্র সম্বল এই বাড়ি ঘরগুলি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেবার ফলে গরিব মানুষগুলো পরিবার নিয়ে সম্পূর্ণ অসহায় অবস্থায় খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে।
অতি স্বল্প আয় হওয়ার সুবাদে এই উচ্ছেদকৃত পরিবারগুলির প্রায় ৯৯ শতাংশের পক্ষেই অন্য কোথাও ঘরভাড়া করে বা বাসস্থানের ব্যবস্থা করা প্রায় অসম্ভবই বলা চলে। এই অবস্থায় তাঁরা কোথায় যাবেন? এদিকে শীত দ্রুত ঘনিয়ে আসছে। জরুরী ভিত্তিতে তাঁদের জন্য বিকল্প বাসস্থানের ব্যবস্থা করা নাহলে অচিরেই তাঁদের একটা মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হবে। উক্ত এলাকা পরিদর্শন কালে ঘরবাড়ি হারা বিপন্ন পরিবারসমূহের একটা অংশ আমার হাতে সরকারের উদ্দেশ্যে একটি স্মারকলিপি সোথে জুড়ে দিয়েছে। স্মারকলিপিতে যাঁদের নাম রয়েছে তাঁদের বাইরেও আরো অনেকে রয়েছেন যাঁদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। স্মারকলিপিতে এই বিপন্ন পরিবারসমূহ বিকল্প বাসস্থানের ব্যবস্থা করা সাপেক্ষে এই অভিযান স্থগিত রাখার জন্য আর্জি জানিয়েছেন এবং উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
চিঠিতে বিরোধী দলনেতা আরো উল্লেখ করেছেন, পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের সময় কালেই আগরতলা শহরের সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণ করতে বিকল্প জাতীয় সড়ক নির্মাণের জন্য উক্ত জায়গায় রাস্তার দুই দিকে ড্রেইন নির্মাণ করে রাস্তার জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে ২০১৮ সালে নতুন সরকার গঠিত হবার পর এই সড়কটির জন্য নতুনভাবে প্রান্তিককরণ করা হয় তার ফলে অনেক পরিবারের ঘর ভাঙ্গা পড়ছে। তাঁদের জন্য বিকল্প বাসস্থানের ব্যবস্থা না করে আগরতলা পুর নিগম ও রাজ্য প্রশাসনের তরফ থেকে যে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে তা সম্পূর্ণ নির্মম এবং অমানবিক। তাই পরিবারগুলির জন্য দ্রুত সমস্ত ধরনের সুযোগ সুবিধা সহ বিকল্প বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হোক। পাশাপাশি দারিদ্র সীমারেখার নিচে থাকা পরিবার সমূহের জন্য রুজি-রোজগারের ব্যবস্থা করা হোক। যতক্ষণ না এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে ততক্ষণ উচ্ছেদ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হোক।