Friday, October 18, 2024
বাড়িবিশ্ব সংবাদঅত্যন্ত গোপনীয় গোয়েন্দা তথ্য ফাঁসের উৎস খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র

অত্যন্ত গোপনীয় গোয়েন্দা তথ্য ফাঁসের উৎস খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,১০ এপ্রিল: ইউক্রেইনের বিমান প্রতিরক্ষা থেকে শুরু করে ইসরায়েলের মোসাদ গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণসহ অত্যন্ত গোপনীয় সামরিক ও গোয়েন্দা নথি কীভাবে অনলাইনে ফাঁস হল তার উৎস শনাক্ত করার চেষ্টা করছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। যুক্তরাষ্ট্র থেকেই কেউ একজন এসব ফাঁস করেছে বলে তারা সন্দেহ করছেন বলে জানিয়েছেন কিছু পশ্চিমা নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ও মার্কিন কর্মকর্তা।ওই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নথিগুলোতে ইউক্রেইন যুদ্ধের পাশপাশি চীন, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার মতো বিষয়গুলোর বিস্তৃতি থেকে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে এগুলো কোনো আমেরিকানই ফাঁস করেছে, কোনো মিত্র দেশের কেউ নয়।বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পেন্টাগনের সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মাইকেল মুলরয় বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র থেকেই এগুলো ফাঁস হয়েছে, এখন এতেই জোর দেওয়া হচ্ছে। কারণ নথিগুলোর অধিকাংশই শুধু যুক্তরাষ্ট্রের হাতে আছে।”

মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তদন্ত এখন প্রাথমিক পর্যায়ে আছে এবং যারা এটি পরিচালনা করছেন তারা এই ফাঁসের পেছনে রুশপন্থি কোনো কিছু থাকতে পারে এমন সম্ভাবনা বাতিল করছেন না।এ বিষয়ে ওয়াশিংটনের রুশ দূতাবাস এবং ক্রেমলিন রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।২০১৩ সালে উইকিলিকস ওয়েবসাইট সাত লাখেরও বেশি নথি, ভিডিও ও কূটনৈতিক বার্তা ফাঁস করার পর থেকে এটিকে অন্যতম সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা ভঙ্গের ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত মাসে প্রথম ডিসকর্ড ও ফোরচ্যানের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওয়েবসাইটগুলো দিয়ে ফাঁস হতে শুরু করার পর রয়টার্স ‘গোপনীয়’ ও ‘অত্যন্ত গোপনীয়’ লেবেল আঁটা ৫০টিরও বেশি নথি পর্যালোচনা করেছে। তবে কিছু নথি কয়েক সপ্তাহ আগেই পোস্ট করা হয়েছিল আর সেগুলো নিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস গত শুক্রবার প্রথম প্রতিবেদন করেছিল। রয়টার্স স্বতন্ত্রভাবে এসব নথির সত্যাসত্য যাচাই করতে পারেনি।

এগুলোর কয়েকটিতে যুদ্ধে ইউক্রেইনের পক্ষে হতাহতের বিবরণ আছে। অন্তত একটি নথি গোপনীয় নয় এমন শ্রেণিবদ্ধ করা হলেও সেটি কেন অতি গোপনীয় তথ্যের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে তা পরিষ্কার নয়। কিছু নথিতে ‘ননফর্ন’ চিহ্নিত করা আছে, অর্থাৎ সেগুলো বিদেশি কোনো নাগরিকের কাছে প্রকাশ করা যাবে না। দুইজন মার্কিন কর্মকর্তা রোববার রয়টার্সকে বলেছেন, নথিগুলো তদন্তকারীদের তাদের উৎস সম্পর্কে বিভ্রান্ত করতে বা যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা স্বার্থের ক্ষতি করতে পারে এমন মিথ্য তথ্য প্রচার করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হতে পারে এমন সম্ভাবনা তারা বাতিল করছেন না। এ বিষয়ে হোয়াইট হাউজকে করা প্রশ্ন তারা পেন্টাগনের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে।রোববার এক বিবৃতিতে পেন্টাগন বলেছে, নথিগুলোর সত্যাসত্য যাচাই করে দেখছে তারা, এগুলোতে ‘স্পর্শকাতর ও অত্যন্ত গোপনীয় উপাদান’ থাকতে পারে।

পেন্টাগন এই ইস্যুটিকে মার্কিন বিচার বিভাগের কাছে পাঠিয়েছে আর বিচার বিভাগ এ বিষয়ে একটি ফৌজদারি তদন্ত শুরু করেছে।  ‘গোপনীয়’ চিহ্নিত ২৩ ফেব্রুয়ারির তারিখ দেওয়া একটি নথিতে ইউক্রেইনের এস-৩০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম বর্তমানের হারে ব্যবহৃত হতে থাকলে ২ মে-র মধ্যে অকার্যকর হয়ে যেতে পারে উল্লেখ করে এ বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া আছে।এ ধরনের নিবিড়ভাবে সুরক্ষিত তথ্য রাশিয়ার বাহিনীগুলোর জন্য অনেক কাজের হতে পারে। ইউক্রেইন জানিয়েছে, কীভাবে ফাঁস ঠেকানো যায় তা নিয়ে আলোচনা করতে শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ভলোদিমিরি জেলেনস্কি ও শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বৈঠক করেছেন।  ১ মার্চ সিআইএর গোয়েন্দাদের হালানাগাদ করা ‘অত্যন্ত গোপনীয়’ চিহ্নিত আরেকটি আরেকটি নথিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সুপ্রিম কোর্টের ওপর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে উৎসাহিত করছে দেশটির মোসাদ গোয়েন্দা সংস্থা। যুক্তরাষ্ট্র ইলেকট্রনিক সিগন্যাল ও স্টিস্টেমের ওপর গোয়েন্দাগিরি করে এসব জেনেছে বলে নথিটিতে বলা হয়েছে। এতে ধরণা পাওয়া যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে তাদের অন্যতম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্রের ওপরও গোয়েন্দাগিরি করছে।   

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য