স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২০ জুন : উপনির্বাচনের লড়াই হবে বিজেপি বনাম ত্রিপুরা বাসীর। তাই ত্রিপুরার স্বৈরাচারী শক্তি বিজেপিকে উৎখাত করতে মেরুদন্ড সোজা করে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে আগামী ২৩ জুন গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করার জন্য রাজ্যের চারটি বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার রাজধানীর একটি বেসরকারি হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি বলেন, দেশের সর্ববৃহৎ শক্তি বিজেপি’র সাথে চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে প্রস্তুত একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু বাকি বিরোধী যতগুলি রাজনৈতিক দল রয়েছে, তারা বিজেপি’কে পরাস্ত করতে পারবে না।
একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেসের রয়েছে যারা বিজেপি’র বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলে লড়াই করতে সর্বদা প্রস্তুত। ত্রিপুরায় যেহেতু তৃণমূল কংগ্রেস প্রবেশ করেছে, তাই যতদিন না পর্যন্ত ত্রিপুরায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে ততদিন ত্রিপুরায় মাটি কামড়ে পড়ে থাকবে তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১১ এবং ২০১৬ সালের তৃণমূল কংগ্রেসের সাথে বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেসের অনেক বেশি তফাৎ রয়েছে। বর্তমানে যে তৃণমূল কংগ্রেস রয়েছে, তারা চোখ রাঙানোরকে ভয় পায় না। আজকের তৃণমূল কংগ্রেস গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং ত্রিপুরা উন্নয়নে বদ্ধপরিকর। বিজেপি যেভাবে ত্রিপুরার সম্মান মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে তা পুনরুদ্ধার করতে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যবাসী সহযোগিতা চায় বলে জানান তিনি।
আরো বলেন ত্রিপুরায় ১০ মাস আগে যখন তৃণমূল কংগ্রেস এসেছে, সেদিনই বিজেপি বুঝে গেছে তাদের পায়ের নিচের মাটি সরে গেছে। তাই মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবকে পদ থেকে অপসারণ করেছে। বিজেপি সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে। আসন্ন উপনির্বাচনে কেউ যদি সিপিআইএম এবং কংগ্রেসকে ভোট দেয় তাহলে সেটা হবে সবচেয়ে বড় ভুল। কারণ যদি সিপিআইএম এবং কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া হয় তাহলে বিজেপির বিরুদ্ধে যে লড়াই তার কোনো মূল্য থাকবে না। রাজ্যের মাটিতে সি.পি.আই.এম এবং কংগ্রেস আর কোনোদিনই প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে না। কংগ্রেসকে ত্রিপুরার মানুষ সুযোগ দিয়েছে, সিপিআইএম’কে দীর্ঘ ২৫ বছর সময় দিয়েছে। কিন্তু কেউই ত্রিপুরার উন্নয়ন করতে পারেনি বলে জানান তিনি।
২০১৮ সালে রাজ্যের মানুষ বহু স্বপ্ন নিয়ে বিজেপি’কে প্রতিষ্ঠা করেছিল। কিন্তু শিক্ষা ব্যবস্থা, কর্মসংস্থান, চিকিৎসাব্যবস্থা কোন কিছুর উন্নয়ন হয়নি। শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা ত্রিপুরা রাজ্যে। রাস্তাঘাট নেই, বেকারদের কর্মসংস্থানের অভাব। ১৮ শতাংশ বেকারত্ব ত্রিপুরা রাজ্যে রয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে বেকারত্ব মাত্র ৪ শতাংশ। চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং শিক্ষা ব্যবস্থার অনেক উন্নয়ন হয়েছে। এমন কি বিজেপি আগরতলার শহরকে স্মার্ট সিটি বলে দাবি করলেও সেই স্মার্ট সিটি’তে মাত্র এক ঘণ্টা বৃষ্টি হলে জল জমে যায়। ব্যর্থ সরকার’ বলে জানান অভিষেক। স্মার্ট সিটি নিয়ে আরো বলেন সরকার স্মার্ট সিটির নাম করে কেন্দ্র থেকে ২৪৫ কোটি টাকা রাজ্যে এনেছে। কিন্তু সেই টাকা দিয়ে কি উন্নয়ন করেছে তার জবাব চাইলেন অভিষেক।
সন্ত্রাস প্রসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দীর্ঘ ২৫ বছরের সিপিআইএম-এর সন্ত্রাসকে হার মানিয়ে দিয়েছে বিজেপি। চিকিৎসক-পুলিশ সকল অংশ মানুষ বিজেপির সন্ত্রাসে আক্রান্ত। বিজেপি যতই সন্ত্রাস করুক না কেন তৃণমূল কংগ্রেস ভয় পায় না। এক সংস্থান তথ্যে দেখা গেছে গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে রাজনৈতিক সন্ত্রাসে ত্রিপুরা রাজ্য শীর্ষস্থান দখল করে আছে। আর এর থেকে বেরিয়ে আসতে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
২০১৮ সালে ডাবল ইঞ্জিন যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা কিছুই পালন করতে পারেনি। শুধু জুমলা বাজি করেছে। তাই এর থেকে ত্রিপুরা মুক্তি চাইছে বলে জানান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়া উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ, রাজ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃত্ব রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ সুস্মিতা দেব, প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সুবল ভৌমিক।