স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৫ নভেম্বর : ভিআইপি বলে কি দূর্ঘটনায় যুবককে পিষে মারার অপরাধে আইনের আওতায় আসবেন না? উদয়পুরে ভিআইপি’র গাড়ি দুর্ঘটনায় বেঘোরে প্রাণ হারানো যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং মৃত যুবক পীযূষ দেবনাথের পরিবারকে পর্যাপ্ত অর্থনৈতিক ও অন্যান্য সরকারী সাহায্য দেওয়ার দাবিতে উদয়পুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের নিকট প্রতিনিধিমূলক ডেপুটেশান প্রদান করলো ডিওয়াইএফআই উদয়পুর বিভাগীয় কমিটি। আধিকারিক প্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করেন প্রয়োজনীয় সমস্ত উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। উল্লেখ্য রাজ্যের সাধারণ মানুষ-সহ সর্বস্তরের জনগণ অবগত আছে গত ৩১ অক্টোবর আনুমানিক রাত নয়টা নাগাদ রাধাকিশোরপুর থানাধীন গকুলপুর এলাকার আগরতলা- উদয়পুর জাতীয় সড়কে ভিআইপি গাড়ির ধাক্কায় উদয়পুর টেপানিয়া এলাকার যুবক পীযূষ দেবনাথের মৃত্যু হয়।
ডিওয়াইএফআই উদয়পুর বিভাগীয় কমিটি এদিন ডেপুটেশানের স্মারক লিপিতে জানায়, অকস্মাৎ যেকোন দূর্ঘটনা ঘটতেই পারে। কিন্তু দূর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর আহত ব্যক্তিকে হাসপাতাল পাঠিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে সামাজিক ও মানবিক দায়িত্ব। কিন্তু সেদিন যে ভিআইপি গাড়ি দুর্ঘটনায় পীযূষ দেবনাথ মারাত্মক ভাবে প্রথমে আহত হয়েছিল, তাকে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে ভিআইপি কোন ভূমিকা নেননি, এমনকি ভিআইপি গাড়ি এবং তার এসকর্ট দাঁড়াই নি বলেই অভিযোগ। আরো অভিযোগ যুবকটি এসকর্ট গাড়ি ও ভিআইপি গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় পড়ে থাকে। তারপর দমকল কর্মীরা খবর পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরবর্তী সময় হাসপাতালে মৃত্যু হয়।
ভিআইপি-দের এরকম ভূমিকা চূড়ান্ত অমানবিক। মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের কাছে দাবি জানিয়েছে গোটা ঘটনার তদন্তক্রমে আইনানুগ ব্যবস্থা দ্রুত গ্রহণ করতে হবে এবং দূর্ঘটনায় মৃত যুবক পীযূষ দেবনাথের পরিবারকে পর্যাপ্ত প্রয়োজনীয় আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।মঙ্গলবার ডেপুটেশানের স্মারকলিপির সাথে তুলে দেওয়া হয় মৃত পীযূষ দেবনাথের স্ত্রী সুস্মিতা গোস্বামী দেবনাথের মামলার প্রতিলিপিও। মৃতের স্ত্রী’র লিখিত অভিযোগে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে পীযূষের স্কুটিতে প্রথমে ধাক্কা দেয় ভিআইপি’র এসকর্ট গাড়ি। রাস্তায় ছিটকে পড়ার পর পীযূষের উপর দিয়ে যায় টি আর ০১ এফ ০৯৭৩ ভিআইপি’র গাড়ি। এতে পীযূষের মাথা থেঁতলে যায়। সুস্মিতা দেবী লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন ভিআইপি-টি ছিল লোকায়ুক্ত। ডেপুটেশনে গোটা ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থার দাবি জানায় ডিওয়াইএফআই। এদিন ডেপুটেশানের প্রতিনিধি দলে ছিলেন ডিওয়াইএফআই বিভাগীয় সম্পাদক শুভ চক্রবর্ত্তী, যুবনেতা সোমরাজ চৌধুরী, বাদল মালাকার ও অজিত পাল। তাদের বক্তব্য ভিআইপিদের রাস্তা দিয়ে চলার সময় সংযত হওয়া প্রয়োজন। রাস্তা দিয়ে চলাচল শুধু তারা করেন না। সাধারণ মানুষ চলাচল করে। যেহেতু দুর্ঘটনা সেদিন ঘটেছিল সাথে সাথে যদি পীযূষকে হাসপাতাল নেওয়া যেত তাহলে হয়তো প্রাণে বেঁচে যেত পীযুষ। কিন্তু তা না করে ঘটনাস্থল থেকে চলে আসার পেছনে মূলত কিসের পরিচয়? অসহায় পরিবারের পাশে পর্যন্ত দাঁড়াতে দেখা যায়নি ভিআইপি -র! তাই মানুষ এখন অভিযুক্তের শাস্তি এবং মৃত পীযুষের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করার জন্য দাবি তুলেছে।
