স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২০ জানুয়ারিঃ মদ নিষিদ্ধ বিহার রাজ্যে। আইনি বাধা চোরাপথে আমদানির অন্ত নেই। যার ফল হচ্ছে ভয়াবহ। এবার বিহারের চম্পারণ জেলায় বিষমদ খেয়ে মৃত্যু হল ৭ জনের। রবিবার এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে নীতীশের প্রশাসন। বিষমদের জেরে এই মৃত্যু নাকি ঘটনার পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে তা জানতে উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চার দিন আগে বিষমদে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও রবিবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। তবে যে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের সকলের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াও সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। মৃতদের প্রত্যেকের বাড়ি লোরিয়া থানা এলাকায়। স্থানীয়দের দাবি, বিষমদ খেয়েই মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। যদিও পুলিশ সুপার শৌর্য সুমন বলেন, ৫ জনের মৃত্যু বিষ মদের কারণে হয়ে থাকলেও, বাকি দুজনের মৃত্যুর সম্ভবত বিষমদের জেরে হয়নি।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে সংবাদ মাধ্যমকে পুলিশ সুপার জানান, “প্রথম মৃত্যুর ঘটনা গত ১৫ জানুয়ারি হয়ে থাকলেও, রবিবার বিষটি জানতে পারি আমরা। তবে ৭ জনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে ট্রাক্টরের ধাক্কায় ও দ্বিতীয় জনের মৃত্যু শারীরিক অসুস্থতার কারণে। বাকি ৫ জনের মৃত্যুর কারণ এখনও আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। যেহেতু সব দেহগুলির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে ফলে মৃত্যুর কারণ জানতে আমরা তদন্ত কমিটি তৈরি করেছি। এই ঘটনায় পশ্চিম চম্পারণের ডিডিসি সুমিত কুমার বলেন, কেন এত জন মানুষের মৃত্যু হল তা খতিয়ে দেখা হচ্চে। তদন্ত কমিটিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই বিষয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। এই মৃত্যুর কারণ বিষমদ হয়, যে বা যারা এই বিষমদের চোরাকারবার করছে তাঁদের কাউকে রেহাত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে বিহারে মদ বিক্রি নিষিদ্ধ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। রাজ্যকে নেশামুক্ত করে তোলাই নাকি ছিল উদ্দেশ্য। যদিও অভিযোগ, সরকারি নিষেধাজ্ঞার ফলে মদের একটি বিরাট ‘কালোবাজার’ তৈরি হয়েছে রাজ্যটিতে। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্ত সতর্কতা জলাঞ্জলি দিয়ে বিপুল মাত্রায় তৈরি হচ্ছে চোলাই মদ, স্থানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ‘দেশি’। আর এই মদের জেরেই প্রতি বছর বিহারে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়। এহেন চোলাই মদ বন্ধ করতে বিহার সরকার নানা পদক্ষেপের বার্তা দিলেও বাস্তবে তা যে খুব বিশেষ সাফল্য পায়নি, একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা সেটাই প্রমাণ করে।