Saturday, February 8, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদমজুদ থেকে রেকর্ড তেল ছাড়বে যুক্তরাষ্ট্র, কমছে দাম

মজুদ থেকে রেকর্ড তেল ছাড়বে যুক্তরাষ্ট্র, কমছে দাম

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩১ মার্চ।  জ্বালানি তেলের দাম হু হু করে বাড়ছে। এ ঊর্ধ্বগতির লাগাম টেনে ধরতে যুক্তরাষ্ট্র নতুন পদক্ষেপ নিতে চলেছে এমন খবরেই তেলের দাম একলাফে অনেকটা কমে এসেছে।বিবিসি জানায়, আগামী কয়েকমাসে ‍মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন তাদের ‘স্ট্র্যাটেজিক পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ’ থেকে ১৮ কোটি ব্যারেল পর্যন্ত তেল বাজারে ছাড়ার কথা বিবেচনা করছে।

খবরটি নিশ্চিত হলে বলা যায়, ১৯৭৪ সালে রিজার্ভ তৈরি হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র এবারই এত বেশি পরিমাণে তেল বাজারে ছাড়ছে।ইউক্রেইন যুদ্ধ এবং এর জেরে রাশিয়ার জ্বালানি খাতের উপর পশ্চিমাদের কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্ববাজারে তেলের দাম এক লাফে ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে যায়।  এ মাসের শুরুতে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১৩৯ মার্কিন ডলার পর্যন্ত উঠে গিয়েছিল।মার্চের শুরুতে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেল প্রতি ১৩৯ মার্কিন ডলারে পৌঁছে গেলেও পর অবশ্য আস্তে আস্তে তা কমতে থাকে। কিন্তু তারপরও এটির বর্তমান দাম গত বছরের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি।

বিবিসি জানায়, নিউ ইয়র্কে বাজার খোলার পর ‍যুক্তরাষ্ট্রের তেলের‍ বেঞ্চমার্ক (ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট) ৫ দশমিক ৪ শতাংশ কমে ব্যারেল প্রতি ১০২ মার্কিন ডলার এবং ব্রেন্ট ক্রুডের এর দাম ৪ দশমিক ৬ শতাংশ কমে ব্যারেল প্রতি ১০৮ মার্কিন ডলার হয়েছে।আসছে নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচন। জ্বালানির দাম বৃদ্ধির ফলে জনজীবনে যে ভোগান্তি দেখা দিয়েছে, তাতে নির্বাচনে তেলের দামের উল্লম্ফন যে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়াবে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।রিজার্ভার থেকে তেল ছাড়ার বিষয়ে হোয়াইট হাউজ থেকে বিস্তারিত কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি। বরং বিবৃতিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় ১৩:৩০ মিনিটে (১৭:৩০ জিএমটি) প্রেসিডেন্ট বাইডেন ভাষণ দেবেন।

সেখান তিনি ‘পুতিনের প্রভাবে জ্বালানির দামে যে উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে তা হ্রাস করতে এবং আমেরিকার মানুষদের জন্য পাম্পে তেলের দাম কমাতে তার প্রশাসন কী ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে’ সে সম্পর্কে জানাবেন।বিশ্ববাজারে তেলের দাম নিয়ে আলোচনার জন্য বৃহস্পতিবারই ওপেক (অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিস) ভুক্ত দেশ এবং তাদের মিত্রদের বৈঠকে বসার কথাও রয়েছে। রাশিয়াও ওপেকের সদস্য।বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমাতে বিশ্বের বড় বড় তেল উৎপাদনকারী দেশ যারা ‘ওপেকপ্লাস’ নামে পরিচিত, তারা তেলের উৎপাদন ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধির চুক্তিতে অটল থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে ২০২০ সালের পুরোটা এবং ২০২১ সালের প্রথম কয়েক মাস বিশ্বজুড়ে কঠোর লকডাউন জারি ছিল। ফলে থমকে গিয়েছিল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। তেলের চাহিদাও অনেকটা হ্রাস পেয়েছিল।

২০২১ সালের শেষ দিকে মহামারী কাটিয়ে বিশ্ব অর্থনীতি যখন আবার সচল হতে শুরু করে তখন জ্বালানির চাহিদাও বেড়ে যায়। ফলে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সরবরাহে তখনই সামান্য হলেও টান পড়েছে, যার ফলে তেলের দাম চড়তে শুরু করে।পরিস্থিতি আরও খারাপের দিয়ে মোড় নেয় ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরু হলে। ইউক্রেইনে আগ্রাসনের জেরে পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার জ্বালানি খাতের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে তা চূড়ান্ত রূপ নেয়। গত কয়েক সপ্তাহে রাশিয়ার তেল রপ্তানি দিনে গড়ে প্রায় ৩০ লাখ ব্যারেল কমে গেছে।

সৌদি আরবের পর রাশিয়া বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তেল রপ্তানিকার দেশ। ফলে রাশিয়া থেকে তেলের যোগান কমে যাওয়ায় বিশ্ববাজারে তেল সরবরাহে বড় ধরনের শূন্যতা তৈরি হয়।সেই শূন্যতা পূরণের পথ এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। কারণ, তেল উৎপাদনকারী বেশিরভাগ দেশই হয় তাদের সক্ষমতার সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে বা তারা তেলের উৎপাদন আর বাড়াতে চাইছে না।বিশ্বের সর্বোচ্চ তেল উৎপাদনকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বর্তমানে দিনে এক কোটি ১৭ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন করে। কিন্তু বিশ্বের তেলের চাহিদা মেটাতে এটিই যথেষ্ট নয়।বিশ্বের জ্বালানি পরিস্থিতি নিয়ে আলোচানার জন্য ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) শুক্রবার একটি জরুটি বৈঠক ডেকেছে।যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি এবং জাপানসহ ২৯টি দেশ আইইএ-র সদস্য। তবে তারাও যুক্তরাষ্ট্রের মত রিজার্ভার থেকে তেল ছাড়বে কিনা সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য