স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২২ মে: ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়ায় ট্যাংক দিয়ে ও আকাশ থেকে বোমা হামলা চালিয়ে কিছু আবাসিক এলাকা ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তারা এক হাসপাতালেও আঘাত হেনেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।আর একইদিন মঙ্গলবার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় বিমান হামলা চালিয়ে অন্তত পাঁচজনকে হত্যা করেছে।চলতি মাসে গাজা ভূখণ্ডের উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার কারণে নতুন করে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে শুরু করেছে। হানাদার বাহিনী গাজায় ত্রাণ প্রবেশ কঠোরভাবে সীমাবদ্ধ করে রাখায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি বাড়তে শুরু করেছে।
১৯৪৯ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকালে নিজ ভূমি থেকে বিতারিত ফিলিস্তিনিদের জন্য জাবালিয়ায় বিস্তৃত শরণার্থী শিবির গড়ে তোলা হয়। ৭৫ বছর পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সেই শরণার্থী শিবিরের কেন্দ্রীয় বাজারের কাছে বিভিন্ন সম্পত্তি ও দোকানপাট বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে; স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাতে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।কয়েক মাস আগে ইসরায়েল জানিয়েছিল, তারা জাবালিয়া শরণার্থী শিবির হামাস মুক্ত করেছে; কিন্তু হামাসের যোদ্ধারা এখানে ফের মিলিত হচ্ছে দাবি করে দুই সপ্তাহ আগে তারা ফের শিবিরটিতে প্রবেশ করে।গাজাজুড়ে গত কয়েকদিনের অভিযানের পর্যালোচনায় ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে, এ সময় তারা গাজাজুড়ে ‘শত্রুর প্রায় ৭০টি লক্ষ্যস্থল’ গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এসব ‘লক্ষ্যস্থলের’ মধ্যে সামরিক কম্পাউন্ড, অস্ত্র গুদামের স্থান, ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার ও পর্যবেক্ষণ পোস্ট আছে বলে দাবি করেছে তারা।
ফিলিস্তিনি চিকিৎসা কর্মীরা জানিয়েছেন, জাবালিয়ার কামাল আদাওয়ান হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে, এতে আতঙ্কিত কর্মীরা তড়িঘড়ি করে রোগীদের বেডে ও স্ট্রেচারে তুলে বাইরে ধ্বংসস্তূপ ছাড়ানো রাস্তায় চলে যায়।হাসপাতালটির প্রধান হুসেইন আবু সাফিয়া বলেন, “প্রথম ক্ষেপণাস্ত্রটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের প্রবেশপথে আঘাত হানে। আমরা ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করছি এমন সময় দ্বিতীয়টি আঘাত হানে তারপর কাছেই তৃতীয়টি।”স্থানীয় বাসিন্দারা ও চিকিৎসা কর্মীরা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি ট্যাংকগুলো তিন দিন ধরে জাবালিয়ার আল আওদা হাসপাতালও অবরোধ করে রেখেছে।
জেনিভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাসচিব তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস জানিয়েছেন, উত্তর গাজার অসুস্থ ও আহতদের বিকল্প উপায় ফুরিয়ে যাচ্ছে। উত্তর গাজার এ দু’টি হাসপাতালই শুধু সচল ছিল।দক্ষিণে ইসরায়েলি বিমান হামলায় খান ইউনুসে তিনটি শিশু ও রাফায় তিনটি শিশুসহ পাঁচ বেসামরিক নিহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, গাজায় প্রায় আট মাস ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৫৫০০ ছাড়িয়ে গেছে ও আরও ১০ হাজার নিখোঁজ রয়েছেন।