স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১২ এপ্রিল: ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এমিন জাপারোভা বলেছেন, গত বছর তাঁর দেশে রাশিয়ার শুরু করা অভিযান থেকে ভারত শিক্ষা নিতে পারে। যারা দায়মুক্তির সুযোগ নিয়ে নিজেদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করে যায়, তাদের না থামাতে পারার বিপদ সম্পর্কেও ভারতকে সতর্ক করেছেন তিনি।ভারত সফররত জাপারোভা দিল্লিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও বৈদেশিক ঘটনা বিশ্লেষণকারী ভারতীয় সরকারি প্রতিষ্ঠান আইসিডব্লিউএতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেছেন। ভারতের দুই প্রতিবেশী দেশ চীন ও পাকিস্তানকে ইঙ্গিত করে তিনি কথাগুলো বলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।জাপারোভা বলেন, ‘একটি বার্তা নিয়ে আমি ভারতে এসেছি। সত্যিকার অর্থে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ গড়তে চায় ইউক্রেন। হ্যাঁ, আমাদের মাঝখানে একটি ইতিহাস আছে। তবে আমরা ভারতের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।’
ভারতের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোর সম্পর্কের প্রসঙ্গ টেনে জাপারোভা বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশ চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্কটা জটিল। ক্রিমিয়া অধ্যায় থেকেও ভারত শিক্ষা নিতে পারে। দায়মুক্তির ধারা চলতে চলতে পরিস্থিতি বড় আকার ধারণ করতে পারে।’২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চল দখলে নেয় রাশিয়া। এর আট বছর পর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পুরোদমে রুশ অভিযান শুরু হয়।অন্য দেশগুলোর সঙ্গে ভারত কী ধরনের সম্পর্ক বজায় রাখবে, তা নিয়ে ইউক্রেন মাথা ঘামাবে না বলেও উল্লেখ করেছেন জাপারোভা। জ্বালানি কেনা নিয়ে মস্কোর সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্ককে ইঙ্গিত করে জাপারোভা এ কথা বলেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞার পরও ভারত দেশটির কাছ থেকে কম দামে তেল কিনছে।ভারত বলছে, অন্য যেকোনো কিছুর চেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে তেল কেনাকে গুরুত্ব দেয় তারা। আর তাই যেখানেই ভালো কোনো চুক্তি করা যাবে, সেখানেই যেতে রাজি আছে তারা।
জাপারোভা বলেন, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ইউক্রেন সফরে গেলে তাঁকে স্বাগত জানানো হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, অজিত দোভাল সফর (ইউক্রেন) করবেন। রাশিয়া সফরের আরও সময় আছে। আমরা যুদ্ধের মধ্যে আছি। কখনো কখনো এমন পরিস্থিতি হয় যে আপনারা হয়তো কিছু করতে চাইছেন, কিন্তু পারছেন না। আমার এ সফর বন্ধুত্বের এবং ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্কের নিদর্শন। তবে এ ক্ষেত্রে পারস্পরিকতা প্রয়োজন।’ইউক্রেনের এই মন্ত্রী ভারতকে ‘বিশ্বগুরু’ উল্লেখ করে বলেন, ‘যেকোনো ধরনের আধ্যাত্মিক শিক্ষার বার্তা হলো ন্যায়বিচার। তবে মাঝেমধ্যে দেশগুলো যুদ্ধকে বেছে নেয়। ভারত এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। আমরা মিনস্ক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলাম। কারণ, সে সময় আমরা দুর্বল ছিলাম। তবে ২৪ ফেব্রুয়ারির পর আমাদের কাছে এ যুক্তি গ্রহণযোগ্য হবে না।’২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের ক্রিমিয়াকে নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করে নেওয়ার পর কিয়েভ ও মস্কোর মধ্যে মিনস্ক চুক্তি হয়েছিল। ইউক্রেনের দাবি, ওই চুক্তির কিছু শর্ত তাদের জন্য অত্যন্ত প্রতিকূল।