Thursday, January 23, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদইউক্রেইনে অন্যতম বৃহত্তম ক্ষেপণাস্ত্র হামলা রাশিয়ার

ইউক্রেইনে অন্যতম বৃহত্তম ক্ষেপণাস্ত্র হামলা রাশিয়ার

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৭ ডিসেম্বর:ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিবেশী দেশটিতে অন্যতম বৃহত্তম ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।ইউক্রেইনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার ৭০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার পর দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভ পুরোপুরি বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে এবং কিইভ দেশজুড়ে ‘জরুরি ব্ল্যাকআউট’ বাস্তবায়ন করতে বাধ্য হয়।তারা জানান, মধ্যাঞ্চলীয় শহর ক্রেভই রিয়াতে একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে তিন জন ও দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খেরসনে রুশ গোলাবর্ষণে একজন নিহত হয়েছে।রাশিয়ার অধিকৃত পূর্ব ইউক্রেইনের রুশপন্থি ইউক্রেইনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউক্রেইনের গোলাবর্ষণে ১২ জন নিহত হয়েছে।

শুক্রবার রাতে দেওয়া এক ভিডিও বক্তৃতায় ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমিরি জেলেনস্কি বলেছেন, আরও বেশ কয়েকবার ব্যাপক হামলা চালানোর মতো পর্যাপ্ত ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার আছে। এমন মন্তব্যের পর তিনি পশ্চিমা মিত্রদের কিইভকে আরও বেশি ও উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেম সরবরাহ করার আহ্বান জানিয়েছেন। ইউক্রেইন পাল্টা হামলা চালানো মতো ‘যথেষ্ট শক্তি’ রাখে বলে দাবি করেছেন তিনি।

কিইভ বৃহস্পতিবার সতর্ক করে বলেছিল, আগামী বছরের প্রথমদিকে সর্বাত্মক হামলা চালানোর নতুন পরিকল্পনা করেছে মস্কো।অক্টোবরের প্রথমদিকে যুদ্ধক্ষেত্রে কয়েকটি লড়াইয়ে বিপর্যয়ের পর থেকে রাশিয়া প্রায় প্রতি সপ্তাহে ইউক্রেইনের বিদ্যুৎ অবকাঠামো লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে। কিন্তু শুক্রবার ব্যাপক তুষার ও বরফে ঢাকা দেশটিতে চালানো হামলায় অন্য হামলাগুলোর চেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, কিছু মেরামতি কাজ করার পর ইউক্রেইনের গ্রিড পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান উক্রেইনেরহো ‘জরুরি ব্ল্যাকআউট’ অবস্থা প্রত্যাহার করে নেয়। তবে তারা সতর্ক করে বলেছে, আগের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাগুলোর তুলনায় এবার সরঞ্জাম মেরামত করতে ও বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল করতে বেশি সময় লাগতে পারে। 

ইউক্রেইনের বিমান বাহিনী বলেছে, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলোকে বিভ্রান্ত করতে রাশিয়া ইউক্রেইনের কাছে যুদ্ধবিমান উড়িয়েছে।রাশিয়ার ছোড়া ৭৬টি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ৬০টি গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে বলে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর প্রধান দাবি করেছেন; কিন্তু দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী বলেছেন, অন্তত নয়টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। মস্কো বলেছে, তারা ইউক্রেইনকে সামরিকভাবে নিস্ক্রিয় করতে এসব হামলা চালাচ্ছে। আর ইউক্রেইন এসব হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলে দাবি করেছে।  শুক্রবার রাতে কিইভের মেয়র ভিতালি ক্লিচকো বলেছেন, নগরীর বাসিন্দাদের মধ্যে মাত্র এক তৃতীয়াংশের ঘর উষ্ণ রাখার ব্যবস্থা ও পানি আছে এবং ৪০ শতাংশের বিদ্যুৎ আছে। নগরীর পরিবহনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ মেট্রো সিস্টেম বন্ধ আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

জেলেনস্কি ইউক্রেইনীয়দের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন এবং আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষগুলোকে জরুরি বিদ্যুৎ সরবরাহে আরও সৃজনশীল হতে বলেছেন।  ইউক্রেইনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় খারকিভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিদ্যুৎ, পানি ও উষ্ণতা সরবরাহ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে। শুক্রবার রাতে আঞ্চলিক গভর্নর ওলে সিনেগুবভকে উদ্ধৃত করে ইউক্রেইনীয় একটি বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, নগরীর ৫৫ শতাংশ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও আশপাশের অঞ্চলের ৮৫ শতাংশ ফের সচল হয়েছে।নগরীর জরুরি খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে রান্নারত লুদমিলা কোভিলকো বলেন, “জীবন থেমে থাকবে না। আমরা বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি, বিদ্যুৎ চলে গেছে; কিন্তু মানুষকে খাওয়াতে হবে, তাই আমরা লাকড়ির চুলায় রান্না করে চলেছি।”

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য