স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা,১৮ অক্টোবর: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস তার যে ভুল কার্যক্রম বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট করেছে এবং দলের ভেতরে-বাইরে তার অবস্থান অনেকখানি ধসিয়ে দিয়েছে, তার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।“আমি দায় স্বীকার করতে চাই এবং যে ভুলগুলো হয়েছে তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। উচ্চ করের সমস্যা মোকাবেলা করে জ্বালানির দামে জনগণকে সহায়তা করতে চেয়েছি আমি। কিন্তু আমরা তাড়াহুড়ো করে ফেলেছি,” সোমবার বিবিসিকে তিনি এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।ভুলের জন্য ক্ষমা চাইলেও প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়ছেন না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।গত ২৩ সেপ্টেম্বর ট্রাস ও তার সাবেক অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়াটেং একটি নতুন ‘উন্নয়ন পরিকল্পনা’ ঘোষণা করেছিলেন। তাতে ৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ কর ছাড়ের পাশাপাশি জাতীয় বিমা পরিকল্পনা ও স্ট্যাম্প শুল্কে ছাড় দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। ব্যাপক সরকারি ঋণের মাধ্যমে অর্থায়ন করা এই পরিকল্পনা স্থবির অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করবে বলে আশাবাদী ছিলেন ট্রাস।কিন্তু এই পরিকল্পনা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি করে, পাউন্ডের মান এবং সরকারি বন্ডের মূল্য পড়তে থাকে। এটি বাজারকে এমন মাত্রায় ধাক্কা দেয় যে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড বাজার চাঙ্গা করতে ৬৫ বিলিয়ন পাউন্ডের (৭৩ বিলিয়ন ডলার) একটি কর্মসূচি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়।
বাড়তে থাকা রাজনৈতিক চাপ এবং বাজার নিয়ে বেসামাল পরিস্থিতির মধ্যে ট্রাস তার ঘনিষ্ঠ সহকর্মী কোয়াসি কোয়েটাংকে অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেন।শুক্রবার ওই পদে আসা জেরেমি হান্ট সোমবার কর ছাড় সংক্রান্ত ট্রাসের বাকি যে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবগুলো ছিল সেগুলোও ছেঁটে ফেলেন, পিছু হটেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি সহায়তার বিশাল প্রকল্প থেকেও।তিনি কি এখন কেবল নামেই প্রধানমন্ত্রী কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাস বলেন, দিক বদলানো দরকার বুঝতে পেরেই তিনি হান্টকে নিয়োগ দিয়েছেন। “যেখানে আমি ছিলাম, তাতে জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় কিছু না করা হতো সম্পূর্ণ দায়িত্বজ্ঞানহীনতা। আমরা যে নীতি বদলেছি, তা ঠিক হয়েছে,” বলেছেন ট্রাস।তার নীতির প্রভাব নিয়ে জানতে চাইলে টোরি এ প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বুঝতে পেরেছেন যে দেশজুড়ে পরিবারগুলোর জন্য এটা ‘খুবই কষ্টসাধ্য’ হতো, তবে তাদের সহায়তার জন্য যা করা দরকার তা তিনি করবেন।জ্বালানি নিয়ে তার দুই বছরের যে প্যাকেজ ছিল, হান্ট সেখান থেকে অনেকখানিই পিছু হটেছেন, ফলে জ্বালানির দামে সহায়তা এখন কেবল আগামী বছরের এপ্রিল পর্যন্তই থাকবে।“সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণরা আগামী শীত পর্যন্ত সুরক্ষিত থাকছেন। দেখি, কী করা যায়,” বলেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।দল ও দেশের নেতৃত্ব কাঁধে নিয়েছেন দেড় মাসও হয়নি, এর মধ্যেই ট্রাস দলীয় অনেক আইনপ্রণেতার অসন্তোষের মুখে পড়েছেন; চলতি সপ্তাহে ওই আইনপ্রণেতারা তাকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারেন বলে খবরও বেরিয়েছে।সোমবার ট্রাসের মধ্যেও ‘লড়াকু’ মনোভাবই দেখা গেছে। বলেছেন, তিনিই আগামী নির্বাচনে কনজারভেটিভদের নেতৃত্ব দেবেন।“আমি থাকছি, কেননা আমি দেশকে সেবা করতে নির্বাচিত হয়েছি। আর সেটা করতে আমি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ,” বলেছেন তিনি।