আগরতলা, ৭ জুলাই (হি.স.) : ত্রিপুরার ঐতিহ্যবাহী উৎসব খার্চি পূজার সূচনা হয়েছে আজ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক টুইট বার্তায় রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। চিরাচরিত প্রথা মেনে খার্চি পূজা শুরু হয়েছে। করোনার প্রকোপের জেরে দু বছর পর খার্চি পূজায় অগণিত ভক্তদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। খার্চি উৎসবের সূচনা করে জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী রামপদ জমাতিয়া বলেন, খার্চির আলোক শিখার স্পর্শে আমাদের সম্প্রীতি আরও সুদৃঢ় হয়।
প্রসঙ্গত, আজ খার্চি উৎসবের সূচনা লগ্নে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক টুইট বার্তায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শুভেচ্ছাবার্তায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, “আজ থেকে শুরু হয়েছে ত্রিপুরার ঐতিহ্যবাহী খার্চি পূজা। চতুর্দশ দেবতার কাছে আমি সকলের জন্য আশীর্বাদ চাইছি। সেই সাথে প্রত্যেকের সুস্বাস্থ্য, সফলতা ও সমৃদ্ধি কামনা করছি।”
এদিন জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী বলেন, খার্চি পূজা এ রাজ্যের এক ঐতিহ্যবাহী উৎসব। সম্প্রীতির উৎসব হচ্ছে খার্চি। আজ থেকে পুরান হাবেলির চতুর্দশ দেবতার মন্দিরে সাতদিন ব্যাপী শুরু হয়েছে খার্চি পূজা। আজ একটি পবিত্র ও শুভ তিথি। এই তিথিতেই সকলের সুখ ও সমৃদ্ধির কামনায় চতুর্দশ দেবতার বাৎসরিক পূজার আয়োজন করা হয়।
তাঁর কথায়, আমরা সকলেই চতুর্দশ দেবতার আশীর্বাদে ধন্য। খার্চির আলোক শিখার স্পর্শে আমাদের সম্প্রীতি আরও সুদৃঢ় হয়। চতুর্দশ দেবতার আশীর্বাদে রাজ্যের বিকাশে সরকার বহুমুখী কর্মসূচি নিয়েছে। পুরাতন হাবেলির চতুর্দশ দেবতার মন্দিরের উন্নয়নেও নেওয়া হয়েছে পরিকল্পনা। জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, ত্রিপুরার বিকাশে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল অংশের মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি মৎস্যমন্ত্রী প্রেমকুমার রিয়াং খার্চি উৎসবের প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে উৎসবের আনন্দ উপভোগ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, খার্চি উৎসব সকলের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলে এই উৎসবের আনন্দ উপভোগ করবেন।
খর্চি উৎসব ও মেলা কমিটির চেয়ারম্যান ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী অনুষ্ঠানে সকলকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, গত দু’বছর আমরা করোনা ভাইরাসের এক গহীন অন্ধকারের কবলে ছিলাম। লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে আমরা সেই অন্ধকার থেকে মুক্ত হতে পেরেছি। চতুর্দশ দেবতার কাছে আমাদের সকলের কামনা থাকবে এমন অন্ধকারযুগ যেন আমাদের জীবনে আর না আসে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি যা-ই হোক না-কেন আমরা সমস্ত হিংসা বিদ্বেষ ভুলে নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়ে উন্নয়নের কাজে ব্রতী হব। কোনও কু প্রভাবে বা গুজবে আমরা অনুপ্রাণিত হব না।এদিকে, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা আজ বিকালে খার্চি উৎসব উপলক্ষে চতুর্দশ দেবতা বাড়িতে যান। সেখানে তিনি চতুর্দশ দেবতার উদ্দেশ্যে পূজা অর্চনা করেন। প্রধান পুরোহিত চত্তাইয়ের সঙ্গে খার্চির শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। খার্চি উৎসব উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরাবাসীকে প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানান এবং সকলের সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।