স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৭ সেপ্টেম্বর : যতদিন যাচ্ছে শাসকদলের বদান্যতায় জনজীবন বিপন্ন হচ্ছে। মানুষের উৎসবের আনন্দ থেকে শুরু করে সব স্বপ্ন আজ এই সরকারের জন্য ধুলোয় মিশে যাওয়ার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে কারণে অস্বস্তিকর সর্বত্র এবং নাভিশ্বাস উঠেছে। এরই প্রতিবাদে আগামী তেসরা অক্টোবর একটি প্রতিবাদ কর্মসূচি আগরতলা শহরে সংগঠিত করা হবে। শুক্রবার সিপিআইএম রাজ্য কার্যালয় সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা বলেন বিরোধী দলনেতা তথা সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী।
তিনি বলেন, যে বিষয়গুলোর উপর এই কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে রাজ্যে। প্রতিমাসে সাত থেকে আট জন খুন হয়েছে রাজ্যে। এই ঘটনায় যাদের নাম আছে তারা হলেন শাসকদলের সমর্থক। আর যখন এটা পুলিশ জানতে পারে তখন তদন্ত প্রক্রিয়ার এক কদমও এগিয়ে যায় না। মামলার ধারা পাল্টে যায়। এতে অভিযুক্তরা জামিন পেয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয়ত নারী নির্যাতন। কারণ রাজ্যে নারীদের সাথে যা খুশি তাচ্ছিল্য চলছে। দৈনিক সাত থেকে আটটি নারী সংক্রান্ত অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে রাজ্যে। আর এগুলি যখন অপরাধ খোঁজা হয় তখন শাসক দলের নেতারা সামনে আসছে। তাদের এই দেবতুল্য অপরাধীদের পুলিশ না পেলেও সামাজিক মাধ্যমে মানুষ তাদের ছবি তুলে ধরছে। তারা শাসক দলের নেতাদের সাথে আলো করে ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে ছাড়ার ছবি মানুষ তুলে ধরে। প্রতিমাসে প্রায় ৫২ টি করে মহিলা সংক্রান্ত অপরাধের ঘটনা সংগঠিত হচ্ছে।
এ ধরনের ঘটনা স্পষ্ট করে যেন ত্রিপুরা রাজ্য নারীর সংক্রান্ত অপরাধী মূলক ঘটনার রাজধানী হয়ে গেছে। সবচেয়ে উদ্বেগ জনক বিষয় হলো শাসকদলের কারণে রাষ্ট্রপতি কালার্স প্রাপ্ত পুলিশের মান মর্যাদা সব কিছু আজ ভ্রুণ্ঠিত। এই পরিবেশের বিরোধিতা করে আন্দোলন করা হবে। তৃতীয়ত, গত আগস্ট মাসে বন্যায় দুর্গতদের সাথে বর্তমান সরকার অত্যন্ত অমানবিক আচরণ করে চলেছে। চূড়ান্ত দলবাজি করে ত্রান বিলি করছে। এর বিরোধিতা করে এই দিনের আন্দোলন কর্মসূচি থেকে আওয়াজ তোলা হবে। একই সাথে তিনি বলেন বিগত ২০১৮ সালের আগে রাজ্যের দুর্গাপূজার আগে মানুষের হাতে অর্থ যায়, এর জন্য সরকার রেগার কাজ প্রদান করতো। ফলে গ্রামীন এলাকার বাজার গুলিতে মানুষের ভিড় তৈরি হতো। রাতভর যেন এক প্রকার উৎসব চলতো বাজারগুলির মধ্যে। কিন্তু বর্তমানে নেই কাজের যোগান, নেই খাদ্যের যোগান। এক প্রকার ভাবে বর্তমান সরকারের আমলে গ্রামীণ এলাকায় গুলি যেন পিতৃহারা এবং মাতৃহারা শোকের ছায়া ডুবে আছে। তাই গ্রামীন এলাকায় গুলিতে রেগার দেওয়ার দাবি তোলা হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন দপ্তরে শূন্য পদ পূরণের জন্য সরকারের উদ্দেশ্যে দাবি করা হবে। কারণ বেকারত্ব যে কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে সেটা আর বলার অপেক্ষা নেই। তাই বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য দাবি করা হবে। অপরদিকে বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি হয়েছে। সর্বশেষ হলো দুর্নীতি। দুর্নীতির সাথে বিজেপি এবং বিজেপি পরিচালিত সরকার সমর্থক হয়ে গেছে। তারা জনজীবনের উপর ব্যাপক সংকট তৈরি করেছে। তাই এই আন্দোলন কর্মসূচিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিআইএম। সেদিন সারা রাজ্য থেকে আগরতলায় কর্মী-সমর্থক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি সংগঠিত করা হবে বলে জানান তিনি। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে যেদিন এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বামফ্রন্টের আহ্বায়ক নারায়ণ কর।