স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২০ডিসেম্বর: ইসরায়েলের মালিকানাধীন এবং ইসরায়েলের পতাকাবাহী কোনও জাহাজকে নিজেদের বন্দরে ভিড়তে দেবে না মালয়েশিয়া। এমনকি, ইসরায়েলগামী জাহাজের ক্ষেত্রেও এমন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার।সিএনএন জানায়, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের কার্যালয় থেকে বুধবার এক ঘোষণায় বলা হয়েছে, এ নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে কার্যকর হবে। ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিক্রিয়ায় এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, “ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান হত্যাযজ্ঞ ও নিষ্ঠুরতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং মৌলিক মানবিক নীতি উপেক্ষা করার জবাবে তার দেশ এ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।”
বুধবারের এই বিবৃতিতে ইসরায়েল-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক কার্গো শিপিং কোম্পানি ‘জিম’ এর জাহাজও মালয়েশিয়ার বন্দরে ভিড়তে দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে।তাছাড়া, মালয়েশিয়ার যে কোনও বন্দরে ইসরায়েলগামী জাহাজে পণ্য তোলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয় বিবৃতিতে।২০০৫ সালে ইসরায়েলের নিবন্ধিত কোম্পানি এবং জাহাজগুলোকে মালয়েশিয়ার বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এবারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সরকার আজ ইসরায়েলের পতাকাবাহী জাহাজ মালয়েশিয়ার বন্দরে ভেড়ার বিষয়ে আগের মন্ত্রিসভার দেওয়া অনুমতি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ মালয়েশিয়া দীর্ঘদিন ধরেই ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার। কাছাকাছি আরও কয়েকটি দেশ- ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনেই, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ এবং পাকিস্তানের মতো মালয়েশিয়াও ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি।মালয়েশিয়ার পাসপোর্টেও লেখা আছে, ‘ইসরায়েল ছাড়া সব দেশের জন্য বৈধ।’ পূর্ব অনুমতি ছাড়া ইসরায়েলি পাসপোর্টধারীদের মালয়েশিয়ায় প্রবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে।গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের প্রাণঘাতী হামলার পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী নির্বিচারে বিমান থেকে বোমা ও স্থল হামলা চালিয়ে আসছে।
ইসরায়েলের এই অভিযানের প্রতিবাদে মালয়েশিয়ায় গণবিক্ষোভ হচ্ছে। তারা ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের ওপর রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করেছেআনোয়ার ইসরায়েল এবং এর সমর্থক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও সবচেয়ে স্পষ্টভাষী বিশ্বনেতাদের একজন। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এখনও মালয়েশিয়ার অন্যতম ব্যবসায়িক অংশীদার হয়ে আছে।গত নভেম্বরে পার্লামেন্টে এক ভাষণে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছিলেন, মালয়েশিয়া সরকার হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে এবং গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালানোর জন্য গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনও ব্যবস্থাও নেবে না।