স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা,৩ নভেম্বর: কর বাড়ানো, মূল্যস্ফীতি ও রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের প্রতিবাদে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় শহর কলম্বোতে বিক্ষোভ দেখিয়েছে কয়েকশ মানুষ।সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টার মধ্যে বুধবার দেশটিতে এ বিক্ষোভ হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর পাশপাশি ট্রেড ইউনিয়ন ও নাগরিক সমাজের বিভিন্ন সংগঠনও বুধবারের এ বিক্ষোভের আয়োজক ছিল; বিক্ষোভকারীরা কলম্বোর কেন্দ্রস্থলের এমন এক এলাকায় যাওয়ার চেষ্টা করেন যেখানে প্রেসিডেন্ট ভবন ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় অবস্থিত, কিন্তু পুলিশ তাদের বাধা দেয়।“মানুষ এখনও দিনে তিনবেলা খেতেই পারছে না আর এই সরকার মানুষকে সাহায্য করা তো দূর উল্টো তাদের ওপর আরও আরও কর চাপাচ্ছে। আমাদের সমাধান দরকার, এজন্য আমরা তাদের বিরুদ্ধে লড়ে যাবো,” বলেছেন সিলন টিচার্স ইউনিয়নের সম্পাদক জোসেফ স্টালিন।বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ স্মরণকালের সর্বনিম্ন অবস্থায় পৌঁছানোর কারণে তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে পড়া সোয়া দুই কোটি জনসংখ্যার দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কাকে জ্বালানি, রান্নার গ্যাস ও ওষুধসহ জরুরি পণ্য আমদানির ব্যয় মেটাতে ব্যাপক হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ভয়াবহ মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য ঘাটতিতে বিপর্যস্ত দেশটির লাখো মানুষ তুমুল বিক্ষোভে ফেটে পড়ে জুলাইয়ে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ও বাসভবনে হানা দিলে ভীত প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালান ও পদত্যাগ করেন।তার উত্তরসূরী রনিল বিক্রমাসিংহে চলতি মাসের ১৪ তারিখ প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম বাজেট দিতে যাচ্ছেন, যাতে দেশের অর্থনীতিকে পথে ফেরাতে ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ২৯০ কোটি ডলারের বেইলআউট নিশ্চিতে ব্যাপক কর বৃদ্ধিসহ নানান সংস্কার থাকবে বলেই অনুমান করা হচ্ছে।দেশটির ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতি অক্টোবরে ৬৬ শতাংশে পৌঁছেছে, এর সঙ্গে বাড়তি করের বোঝা জনগণের অসন্তোষ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।বুধবার বিক্ষোভকারীরা জাতীয় পতাকা ও কালো পতাকা হাতে ‘রনিল বাড়ি যাও’ স্লোগান দেয় এবং নতুন নির্বাচনের দাবি জানায়।তারা সরকারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদবিরোধী কালাকানুন ব্যবহার করে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেওয়া লোকজনের ওপর নিপীড়ন এবং দুইজনকে এরই মধ্যে জেলে পাঠানো হয়েছে বলেও অভিযোগ আনে।“সবাইকে আইনের আওতায় থাকতে হবে। এটাই গণতন্ত্র। কিন্তু এই সরকার বিক্ষোভের নেতাদের ধরতে সন্ত্রাসবাদবিরোধী আইনকে কাজে লাগাচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে,” বলেছেন প্রধান বিরোধীদল সামাগি জানা বালাভিগায়ার (এসজেবি) এরান বিক্রমারত্নে।“সবাইকে এই সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। আমাদেরকে আমাদের অধিকারের জন্য লড়তে হবে,” বলেছেন তিনি।