স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা,১৭ অক্টোবর: প্রাণঘাতী রোগ ইবোলার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে উগান্ডায় দুই জেলায় তিন সপ্তাহের লকডাউন জারি হয়েছে।বিবিসি জানায়, লকডাউনের এ সময়ে দুই জেলা মুবেন্দে ও প্রতিবেশী কাসান্দেতে সব বার, নাইটক্লাব, উপাসনালয় এবং বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। কারফিউও জারি করা হবে।শনিবার থেকে আগামী ২১ দিনের জন্য এই লকডাউন জারি করা হয়েছে। এই সময়ে কেউ ওই দুই জেলায় ঢুকতে বা সেখান থেকে বের হতে পারবেন না।জেলায় সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। সব ধরনের পরিবহন চলাচলও বন্ধ থাকবে। শুধু কার্গো ট্রাক চলাচল করতে পারবে।গত মাসের শুরুর দিকে রাজধানী কাম্পালা থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে মুবেন্দে জেলায় প্রথম ইবোলা রোগী শনাক্ত হয়। ওই জেলাটিই এখনো রোগের ‘এপিসেন্টার’ হয়ে আছে।উগান্ডায় ইবোলার এবারের প্রাদুর্ভাবে এখন পর্যন্ত ৫৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৯ জন মারা গেছেন। যদিও প্রকৃত আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা আরো অনেক বেশি বলেই ধারণা করা হচ্ছে।উগান্ডার প্রেসিডেন্ট ইউয়েরি মুসেভেনি শুরুতে লকডাউন জারি করতে রাজি ছিলেন না। তখন তিনি বলেছিলেন, ইবোলা বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় না।তাই কোভিড-১৯ মহামারীর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল ইবোলার বেলায় সেটির প্রয়োজন নেই। কিন্তু পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে শুরু করায় লকডাউন জারির উদ্যোগ নেয়া হয়।টেলিভিশনে এক ভাষণে মুসেভেনি বলেন, ‘‘ইবোলা সংক্রমণের বিস্তার রোধে অস্থায়ী এইসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।‘‘আমাদের সবার উচিত কর্তৃপক্ষকে সব ধরণের সহযোগিতা করা। যাতে সম্ভাব্য স্বল্প সময়ের মধ্যে আমরা এবারের প্রাদুর্ভাবকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারি।”আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন এমন ব্যক্তিরা যদি সেল্ফ-আইসোলেশনে না থাকেন তবে তাদের গ্রেপ্তার করার নির্দেশও দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। এছাড়া, তিনি স্থানীয় কবিরাজদেরও নিজস্ব পদ্ধতিতে এ রোগের চিকিৎসার চেষ্টা করা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন।অতীতে ইবোলার প্রাদুর্ভাবের সময় কবিরাজদের চিকিৎসার চেষ্টায় উল্টো ভাইরাস দ্রুত বেশি মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়েছে।এবারের প্রাদুর্ভাবে মারা যাওয়া প্রথম ব্যক্তি মুবেন্দে জেলার ২৪ বছরের এক তরুণ। পরে তার পরিবারের আরো ছয়জন এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।রাজধানী কাম্পালাতেও এ রোগ ছড়িয়েছে এবং এ মাসে সেখানে একজন মারা গেছেন। যদিও নগরীর স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, যিনি মারা গেছেন তিনি মুবেন্দা থেকে রাজধানীতে গেছেন। তাই নগরী এখনো ভাইরাস মুক্ত আছে।এবারের ভাইরাসের ধরণটি ‘সুদান স্ট্রেইন’। ইবোলার টিকা এই ধরণের বিরুদ্ধে কার্যকর নয়।শরীর থেকে নির্গত নির্যাসের মাধ্যমে ইবোলা ছড়ায়। বমি ও পাতলা পায়খানা এ রোগের উপসর্গ। কারো কারো বেলায় শরীরের ভেতরে বা বাইরে রক্তপাতের ঘটনাও ঘটে।