স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২২ ডিসেম্বর: লা লিগার এখন প্রায় মাঝপথ। বেশির ভাগ দলই ১৮টি করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে। রিয়াল মাদ্রিদের সমর্থকেরা চাইলে পরিসংখ্যানে তাকিয়ে কার্লো আনচেলত্তির দলকে এখনই চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করতে পারেন! ভ্রুকুটির আগে পুরোটা শুনুন। ১৯৬১-৬২ ও ১৯৭১-৭২ মৌসুমে লিগের ১৮ ম্যাচ পর্যন্ত এসে ১১টি করে গোল হজম করেছিল রিয়াল। লা লিগার এ পথটুকু (১৮ ম্যাচ) পর্যন্ত ক্লাবটি সবচেয়ে কম গোল হজমের নজির গড়েছিল এ দুটি মৌসুমে এবং দুবারই তারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এবার ১৮ ম্যাচ শেষেও রিয়ালের জালে গোলসংখ্যা ১১। তাহলে কি রিয়াল এবারও চ্যাম্পিয়ন?
সময়ই তা বলে দেবে। আপাতত লা লিগা টেবিলের শীর্ষে থেকে বছর শেষ করা নিশ্চিত করেছে রিয়াল। গতরাতে আলাভেজের মাঠে ১০ জন নিয়ে ১-০ গোলে জিতেছে আনচেলত্তির দল। তবে যোগ করা সময়ে লুকাস ভাসকেজ গোল না করলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে বছর শেষ করা হতো না রিয়ালের। রিয়াল বেতিসের মাঠে আগের ম্যাচে জিরোনা ১-১ গোলে ড্র করায় এবং তারপর রিয়াল নিজেদের ম্যাচটা জেতায় শীর্ষে উঠতে পেরেছে। ১৮ ম্যাচে রিয়াল এবং জিরোনার সংগ্রহ সমান ৪৫ পয়েন্ট করে। গোল ব্যবধানে পিছিয়ে দুইয়ে নেমে গেছে জিরোনা (২১), শীর্ষে রিয়াল (২৮)।আনচেলত্তির দলের জয়টা যে মোটেও সহজ হয়নি, তা স্কোরকার্ড দেখলেই বোঝা যায়। ৫৪ মিনিটে ডিফেন্ডার নাচো লাল কার্ড দেখে বের হয়ে যাওয়ার পর ১০ জনে পরিণত হয়েছিল রিয়াল। এরপর যোগ করা সময়ে হেড থেকে ফুলব্যাক ভাসকেজের গোলে পাওয়া জয়ে যে কেউ প্রশ্ন করতে পারেন, আনচেলত্তির আক্রমণভাগ কি নখদন্তহীন ছিল? বলতে গেলে ঠিক সেটাই। প্রায় কোনো সুযোগই তৈরি করতে না পারা রিয়াল পয়েন্ট ভাগাভাগির দিকেই এগোচ্ছিল।
আলাভেজ ফরোয়ার্ড সামু ওমরদিওনকে স্লাইডিং ট্যাকল করে লাল কার্ড দেখে নাচো সে ব্যাপারটাও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছিলেন। একজন কম নিয়ে খেললে গোল হজমের শঙ্কাটা যে বাড়ে। শেষ পর্যন্ত টনি ক্রুসের কর্নার থেকে ভাসকেজ গোল করায় পূর্ণ ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছে রিয়াল।লা লিগার এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত তিন ম্যাচে যোগ করা সময়ে পাওয়া গোলে জয় পেল রিয়াল। বার্সেলোনা ও হেতাফের বিপক্ষে যোগ করা সময়ে গোল করে জিতিয়েছিলেন জুড বেলিংহাম। এরপর গতরাতে জেতালেন ভাসকেজ। ২০০৮-০৯ মৌসুমের পর এই প্রথম এক মৌসুমে তিনটি ম্যাচে যোগ করা সময়ে পাওয়া গোলে জিতল রিয়াল। জয়ের পর রিয়াল কোচ আনচেলত্তি বলেন, ‘আমি মনে করি শেষ পর্যন্ত জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল। লুকাস ভাসকেজ দুই ম্যাচে বক্সে নিজের কাজটা করেছে। আজ (গত রাত) গোল করেছে এবং ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে গোল বানিয়েছে। সে দেখতে ছোটখাটো মনে হলেও বিপজ্জনক।’
তবে আনচেলত্তির দুশ্চিন্তার জায়গাও আছে। নাচো বের হয়ে যাওয়ার পর মিডফিল্ডার লুকা মদরিচকে তুলে অঁরেলিয়ে চুয়ামেনিকে নামাতে বাধ্য হন আনচেলত্তি। ফরাসি ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার খেলেছেন নাচোর পজিশনে। সামলেছেন রক্ষণ। এই রক্ষণ নিয়েই দুশ্চিন্তায় পড়তে পারেন ইতালিয়ান কোচ। চোটের যে মিছিল চলছে! গোলকিপার থিবো কোর্তোয়া ও সেন্টারব্যাক এদের মিলিতাওয়ের পর গত রোববার ডিফেন্ডার ডেভিড আলাবাও চোটে পড়েন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে উইঙ্গার রদ্রিগোর চোট। গত রাতে যোগ করা সময়ে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ব্রাজিল তারকা।২ জানুয়ারি পর্যন্ত শীতকালীন বিরতির পর ৩ জানুয়ারি লিগে নিজেদের পরবর্তী ম্যাচে মায়োর্কার মুখোমুখি হবে রিয়াল।