Friday, March 21, 2025
বাড়িখেলালেভানডফস্কি যাঁর মধ্যে বাবার ছায়া দেখেন

লেভানডফস্কি যাঁর মধ্যে বাবার ছায়া দেখেন

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক,১৮ মার্চ: বরুসিয়া ডর্টমুন্ডে (২০১০–১৪) চার মৌসুম ছিলেন রবার্ট লেভানডফস্কি। তখন কোচ হিসেবে পেয়েছিলেন ইয়ুর্গেন ক্লপকে। পরে আলাদা হয় দুজনের পথ। ডর্টমুন্ড থেকে ক্লপ ২০১৫ সালে যোগ দেন লিভারপুলে। আর লেভা ডর্টমুন্ড থেকে বায়ার্ন মিউনিখ ঘুরে এখন বার্সেলোনায়। ক্যারিয়ার তাঁদের পথকে বিভক্ত করলেও ক্লপের প্রতি লেভার মনের টানটা এখনো অটুট। লিভারপুল কোচকে ‘পিতৃতুল্য’ বলেই মনে করেন পোলিশ তারকা। ইএসপিএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্লপ, পেপ গার্দিওলা ও কার্লো আনচেলত্তিকে নিয়ে কথা বলেছেন লেভানডফস্কি।ক্লপের ‘ব্যক্তিত্ব’কে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বলে মনে করেন লেভা, ‘সে বাবার মতো হয়ে উঠতে পারে। সব সময় আপনাকে সাহায্য করবে। আবার এই একই ব্যক্তি প্রতিনিয়ত ভালো করার জন্য আপনাকে তাগাদা দেবে। তার কাছে গিয়ে বলা যায়, আমরা সবাই মানুষ আর সব মানুষেরই সীমাবদ্ধতা আছে। সে শুধুই কোচ নয়, জীবন নিয়েও তার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।’

ডর্টমুন্ড ক্যারিয়ারে ক্লপের সঙ্গে একটি ঘটনা উদাহরণ হিসেবে টেনেছেন বার্সেলোনার এই তারকা স্ট্রাইকার, ‘সেই ঘটনাটা আমার ক্যারিয়ার পাল্টে দিয়েছে। এটা প্রথম মৌসুম কিংবা দ্বিতীয় মৌসুমের শুরুর দিকের ঘটনা। ফর্ম ভালো ছিল না। গোল পাচ্ছিলাম না। ক্লপ আমার কাছে কী চান, সেটাও বুঝতে পারছিলাম না। একটি ম্যাচ হারের পর এ নিয়ে সরাসরি তার সঙ্গে কথা বলি। হোটেলে প্রায় মধ্যরাতে তাকে বলেছি, তুমি কী চাও আমার কাছে বুঝতে পারছি না। আমার কাছে তোমার প্রত্যাশাটা কী? ভেবেছিলাম, ৫ থেকে ১০ মিনিট এসব নিয়ে কথা হবে। কিন্তু আমরা প্রায় দেড় ঘণ্টা এ নিয়ে কথা বলেছিলাম। মনে হচ্ছিল, আমি আমার বাবার সঙ্গে কথা বলছি। ১৬ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছি। তারপর থেকে কেউ আমার সঙ্গে ওভাবে কথা বলেনি। সেই ঘটনার তিন দিন পর বুন্দেসলিগায় আমি অগসবুর্গের বিপক্ষে নেমে হ্যাটট্রিক করে এবং একটি গোলও করাই। ৪–০ গোলে জিতেছিলাম ম্যাচটি।’লেভার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, সেই রাতে ক্লপ ঠিক কী বলেছিলেন তাঁকে? বার্সা তারকার উত্তর, ‘সব কথা মনে নেই। তবে তিনি বলেছিলেন, অনুশীলনে আমি যতটুকু দিই, ম্যাচে তার ৭০ শতাংশ দিলেই চলবে। তখন বুঝেছিলাম, আমি মাঠে তার প্রত্যাশামতোই খেলছি। এখন পরের ধাপে যেতে হবে। এই ছোট্ট পরিবর্তনটুকু আমার জীবন পাল্টে দেয়, সম্ভবত ক্যারিয়ারও।’

২০১৩ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত বায়ার্ন মিউনিখের কোচ ছিলেন পেপ গার্দিওলা। তখন তাঁকে কোচ হিসেবে পেয়েছেন লেভানডফস্কি। গার্দিওলার বিশেষত্ব নিয়েও কথা বলেছেন ৩৪ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার, ‘পেপ ফুটবল নিয়ে আমার মানসিকতা পাল্টে দিয়েছে। কখনো কখনো বুঝতে পারতাম না ঠিক কী করা উচিত, কীভাবে খেললে ভালো হয়। মনে হতো বেশি বেশি ভাবছি। পেপ এ নিয়ে চিন্তাভাবনা পাল্টেছেন। মনে আছে একবার বলেছিলেন, আমি তোমাকে খেলা তৈরি করাটা শেখাতে পারব। বল কীভাবে বক্সে নিতে হবে, সেই পথ বের করে দিতে পারব। কিন্তু সেখানে বল নিয়ে তুমি কী করবে, তা বলতে পারব না। কারণ, এ বিষয়ে তুমি আমার চেয়ে ভালো জানো। তার আগপর্যন্ত সবকিছু (আক্রমণ তৈরি করা) গুছিয়ে দিতে পারব। কিন্তু শেষ কাজটায় তুমি আমার চেয়ে ভালো। তাই সিদ্ধান্তটা তোমার।’পেপ গার্দিওলাকে বায়ার্ন কোচ হিসেবে দুই মৌসুমের জন্য পেয়েছেন লেভা। এরপর বায়ার্নের কোচ হয়ে আসেন রিয়াল মাদ্রিদের বর্তমান কোচ কার্লো আনচেলত্তি। অর্থাৎ, বিশ্বের অন্যতম সেরা এই তিন কোচের অধীনেই খেলেছেন লেভা। আনচেলত্তিকে যেভাবে দেখেছেন এই পোলিশ তারকা, ‘তার কাছ থেকে প্রচুর আত্মবিশ্বাস পেয়েছি। এমন আত্মবিশ্বাস সম্ভবত আগে ছিল না আমার। অসাধারণ একজন মানুষ। তিনি এমন কেউ যে আপনার যত্ন নেবে।’

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য