Friday, February 7, 2025
বাড়িবিশ্ব সংবাদবোঝাপড়ার উপর জোর দেওয়া উচিত’, ভারতকে বার্তা চিনের বিদেশমন্ত্রীর

বোঝাপড়ার উপর জোর দেওয়া উচিত’, ভারতকে বার্তা চিনের বিদেশমন্ত্রীর

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৭ জানুয়ারি: বিবাদ বা সন্দেহের পথে না হেঁটে দুই দেশেরই উচিত পারস্পরিক বোঝাপড়ার উপর জোর দেওয়া। ভারতে এমনই বার্তা দিলেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং য়ি। সোমবার বেজিংয়ে ভারতের বিদেশসচিবের সঙ্গে বৈঠকের মধ্যেই দু’দেশের সম্পর্ক জোরদার করার পক্ষে সওয়াল করলেন তিনি।

মাসখানেক আগেই চিন সফরে গিয়েছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। চিনের বিদেশমন্ত্রী তথা বৈদেশিক নীতি সংক্রান্ত কমিশনের প্রধান ওয়াং ইর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। তার পর বিক্রম মিস্রীর চিন সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকেই। পর্যবেক্ষকদের মতে, পূর্ব লাদাখে সীমান্ত নিয়ে বিবাদের জেরে দুই দেশের সম্পর্কের যে অবনতি হয়েছে, তার উন্নতির পথেই হাঁটতে চাইছে ভারত এবং চিন।

বৈঠকে চিনের বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘দুই দেশেরই উচিত সুযোগকে কাজে লাগানো, দুই দেশের মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধি করা। আরও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলি খুঁজে বার করার দায়িত্ব দু’দেশেরই। পারস্পরিক বোঝাপড়া, সমর্থন এবং অর্জনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া।’’ ওয়াং জোর দিয়ে বলেন, ‘‘চিন এবং ভারতের সম্পর্ক উন্নতি সম্পূর্ণরূপে দুই দেশ এবং তাদের জনগণের মৌলিক স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।’’

রবিবার বেজিং গিয়েছেন ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম। চিনা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক দফতরের প্রধান লিউ জিয়ানচাওয়ের সঙ্গে ইতিমধ্যে বৈঠকও করেছেন তিনি। লাদাখে সীমান্ত চুক্তির বিষয়ে দুই দেশ যে ঐকমত্যে পৌঁছেছে, তার বাস্তবায়ন নিয়ে কথা হয় দু’পক্ষের। পাশাপাশি আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন উদ্বেগজনক বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে তাঁদের। ভারত সরকারের প্রতিনিধিদের চিন সফর নিয়ে আশাবাদী বেজিং। তাদের মতে, ‘স্বাভাবিক’ সম্পর্ক ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আলোচনার ধারাবাহিকতা জরুরি।

সীমান্ত-সহ নানা বিষয় নিয়ে ভারত-চিনের বিরোধ বহু দিনের। ২০২০ সালের পর থেকে বিরোধ চরমে ওঠে। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় অনুপ্রবেশের অভিযোগ উঠেছিল চিনা ফৌজের বিরুদ্ধে। উত্তেজনার আবহে ওই বছরের ১৫ জুন গলওয়ানে চিনা হামলায় নিহত হয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় সেনা জওয়ান। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতীয় জওয়ানদের পাল্টা প্রতিরোধে বেশ কয়েক জন চিনা সেনাও নিহত হন। গলওয়ানকাণ্ডের পর থেকেই কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনের জন্য বৈঠক শুরু হয়েছিল। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে চুশুল-মলডো পয়েন্টে দুই সেনার কোর কম্যান্ডা স্তরের বৈঠকের পর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কিছু এলাকা থেকে সেনা সরানো হয়েছিল। ২০২৩ সালের নভেম্বরে সমাপ্ত হয় সেই প্রক্রিয়া।

ভারত এবং চিন দু’পক্ষই লাদাখে সীমান্ত সমস্যার সমাধানের জন্য ঐকমত্যে পৌঁছনোর পরেও গত বছর ডিসেম্বরের শেষের দিকে লাদাখের কিছু অংশকে নিজেদের বলে দাবি করে চিন। বিদেশ মন্ত্রক তার প্রতিবাদ জানিয়ে স্পষ্ট করে দেয়, বেআইনি দখলদারি কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। এই আবহে রবিবার লাদাখ সীমান্ত নিয়ে দুই দেশের আলোচনা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সেই আবহে ভারতের বিদেশমন্ত্রীর চিন সফর খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত কূটনৈতিক মহলের।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য