স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ২৪ নভেম্বর: মিয়ানমারে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। চীন–মিয়ানমার সীমান্তে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে তাঁদের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে আজ শুক্রবার খবর দিয়েছে মিয়ানমারের গণমাধ্যম। মিয়ানমারের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে চীনের।চীনের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের উত্তর–পূর্বাঞ্চলে মাসখানেক ধরে সামরিক জান্তার সঙ্গে বিদ্রোহীদের লড়াই চলছে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বিদ্রোহীরা সেনাদের ওপর বিভিন্ন এলাকায় প্রায়ই হামলা চালাচ্ছে।একই সময়ে চীন ও মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ওই অঞ্চলে ইন্টারনেট প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। চীনের অভিযোগ, এই চক্রের প্রতারণার শিকার হয়েছে তাদের দেশের অনেক নাগরিক। অভিযানে আটক প্রতারক চক্রের কয়েক হাজার সদস্যকে চীনের কাছে হস্তান্তর করেছে।মিয়ানমার ও চীনের গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, চীনের রাষ্ট্রদূত চেন হাই গতকাল বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সুইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় শীর্ষ সেনা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গ্লোবাল নিউজ লাইট অব মিয়ানমারের এক খবরে বলা হয়, বৈঠকে দুপক্ষ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, দুই দেশের জন্য লাভজনক দ্বিপক্ষীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং দুই দেশের সীমান্তে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার বিষয়ে আলোচনা করেন। তবে বৈঠকের বিষয়ে চীনা দূতাবাস থেকে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।২০২১ সালে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে চীন মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। তবে মিয়ানমারের উত্তর–পূর্বাঞ্চলে চীন সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরে সহিংসতার কারণে দুই দেশের সম্পর্কে নানা সময় জটিলতা দেখা দিয়েছে। এই অঞ্চলে প্রায়ই কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের দীর্ঘদিনের সন্দেহ, চীন ওই সীমান্তে বিদ্রোহীদের সমর্থন দিচ্ছে।ভিন্নমতাবলম্বী ও জাতীয়তাবাদীদের ওপর সামরিক জান্তার দমন–পীড়ন শুরুর পর ইয়াঙ্গুনে বিরল এক প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়। সেখানে চীনা দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করেন হাজার হাজার মানুষ। এ সময় তাঁদের হাতে থাকা ব্যানার–প্ল্যাকার্ডে বেইজিংয়ের সমালোচনা করে নানা কথা লেখা ছিল।ইংরেজিতে একটি পোস্টারে লেখা ছিল, ‘আমরা চীনা সরকারের প্রতি অনুরোধ করছি, দেশের উত্তরাঞ্চলে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোকে সমর্থন করবেন না।’ সামরিক জান্তা সরকার এই বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেয়নি। পরে জান্তা সরকারের মুখপাত্র জো তুন বলেন, বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ওই বিক্ষোভ হয়েছে। তিনি চীনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের সমর্থনের বিষয়টি উল্লেখ না করে বলেন, পশ্চিমা গণমাধ্যম চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের সম্পর্ক ধ্বংস করতে চায়।