Friday, April 19, 2024
বাড়িবিশ্ব সংবাদজলবায়ু, আবারও সরব বিশ্ব

জলবায়ু, আবারও সরব বিশ্ব

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ৩১ মার্চ: জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে আবারও নড়েচড়ে বসেছে বিশ্ব। এই পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ ও জলবায়ু ব্যবস্থা রক্ষায় কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, সে বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের (আইসিজে) মতামত জানতে চাইছে জাতিসংঘ। এই মত নিতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাবও পাস হয়েছে। এদিকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আলাদা আলাদা পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া।জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, এ নিয়ে জাতিসংঘের সদস্যদেশগুলোর মধ্যে বিরোধ এর আগেও চোখে পড়েছে। জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক শীর্ষ কপ সম্মেলনেও এই চিত্র দেখা গেছে বিভিন্ন সময়। এই পরিস্থিতিতে ভানুয়াতু সম্প্রতি জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করে। ভানুয়াতুর সঙ্গে এই প্রস্তাব উত্থাপনে ছিল আরও ১৩২টি দেশ। এই প্রস্তাবের উদ্দেশ্য ছিল, আইসিজে বাতলে দিক, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের রক্ষা ও জলবায়ুব্যবস্থা সংরক্ষণে কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে।

এ প্রস্তাব পাসের পর ভানুয়াতুর প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল কালস্কো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বহুমুখী পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে এক নবদিগন্তের সূচনা হলো।সাধারণ পরিষদে এই প্রস্তাব পাসের পর এ নিয়ে কথা বলেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, আইসিজে যখন তার মতামত জানাবে, তখন তা মেনে চলার ব্যাপারে উৎসাহিত হবে দেশগুলো। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে সাহসী এবং শক্তিশালী পদক্ষেপ বিশ্বের জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।জাতিসংঘে পাস হওয়া এই প্রস্তাবকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন বিজ্ঞানীদের পরামর্শক গ্রুপ ইউনিয়ন ফর কনসার্নড সায়েন্টিস্টের সাইনা সাদাই। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে যে প্যারিস চুক্তি হয়েছিল, এই চুক্তি একটা সময় সবার কাছে বাস্তবসম্মত মনে হলো। এই চুক্তির পর জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ।

নবায়নযোগ্য জ্বালানি দ্বিগুণ করবে ইইউ

জলবায়ু পরিবর্তন রোধে জাতিসংঘ যখন আইসিজের মতামত জানতে চাইছে, তখন নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার দ্বিগুণ করতে সম্মত হয়েছে ইইউর দেশগুলো। এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার তারা একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার দ্বিগুণ করবে তারা।এই চুক্তিতে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে রাতভর আলোচনা হয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ও ২৭ দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে। অবশেষে তারা সম্মত হয়, ২০৩০ সাল নাগাদ নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়িয়ে ৪৫ দশমিক ৫ শতাংশ করা হবে। বর্তমানে এই জ্বালানির ব্যবহার ২২ শতাংশ।

একই পথে অস্ট্রেলিয়াযুক্তরাজ্য

গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানো, গ্যাস ও কয়লানির্ভর জ্বালানি খাতে ব্যয় কমাতে নতুন একটি আইন পাস করেছে অস্ট্রেলিয়া। ২০৩০ সাল নাগাদ কার্বন নিঃসরণ ৪৩ শতাংশ কমিয়ে আনতে অস্ট্রেলিয়া যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তা বাস্তবায়নেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।নতুন এই আইন কার্যকর হবে ১ জুলাই থেকে। এটি কার্যকর হলে ২১৫টি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ওপর প্রভাব পড়বে। এই শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো বছরে ১ লাখ টন গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ করে। সরকার আশা করছে, এই আইন বাস্তবায়িত হলে আসছে এক দশকে ২০ কোটি টন কার্বন নিঃসরণ কমানো সম্ভব হবে। নতুন এই আইন নিয়ে আশাবাদী ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের বিশেষজ্ঞ টমি উইডম্যান। তিনি বলেন, ‘কার্বন নিঃসরণ কমানোর বিষয়টি এই প্রথম অস্ট্রেলিয়ার আইনে লেখা হলো। অবশ্যই এটি একটি ভালো বিষয়। এখন আমাদের একটি জলবায়ু নীতি রয়েছে।’রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা কমিয়ে জ্বালানি খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে নতুন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে যুক্তরাজ্য। এর মধ্য দিয়ে পরিবেশবান্ধব ও সহজলভ্য জ্বালানির পথে হাঁটতে যাচ্ছে দেশটি।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য