Friday, April 19, 2024
বাড়িবিশ্ব সংবাদপেরুতে বিক্ষোভে মৃত্যু ২০ ছাড়াল

পেরুতে বিক্ষোভে মৃত্যু ২০ ছাড়াল

স্যন্দন ডিজিটেল ডেস্ক, ১৭ ডিসেম্বর:নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট পেদ্রো ক্যাস্তিয়োকে অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত ও গ্রেপ্তারের পর চলমান বিক্ষোভে ২০ জনের বেশি নিহত হওয়ার পর গভীর হওয়া রাজনৈতিক সংকটের সমাধানে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছে পেরুর কর্তৃপক্ষ।শুক্রবার দেশটির রাজধানী লিমায় ক্ষমতা কাঠামোর সকল শাখার প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত কাউন্সিল অব স্টেটস ও চার্চ নেতাদের এ বৈঠক হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।এর আগে ক্যাস্তিয়োর অভিশংসনকে কেন্দ্র করে চলমান সহিংস বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় সরকারের দুই মন্ত্রী পদত্যাগ করেন।গত ৭ ডিসেম্বর দেশটির বামপন্থি প্রেসিডেন্ট ক্যাস্তিয়ো ক্ষমতাচ্যুত হন।শুক্রবার সন্ধ্যার ওই বৈঠকের পর পেরুর ন্যাশনাল বোর্ড অব জাস্টিসের প্রধান হোসে আভিয়া দেশের সকল নাগরিককে সহিংসতা এড়াতে এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ আলোচনায় বসতে আহ্বান জানান।এ ধরনের আলোচনাকে উৎসাহিত করতে মন্ত্রীরা যে যে এলাকায় বিক্ষোভ হচ্ছে সেখানে যাবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।এ প্রসঙ্গে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে গণমাধ্যমে কোনো বিবৃতি দেননি।

এদিকে বিক্ষোভকারীরা পেরুর স্থানীয় একটি বিমানবন্দরের কার্যক্রম জোর করে বন্ধ করে দেওয়ার পর দেশটির দক্ষিণপূর্ব শহর কুসকোতে কয়েক হাজার পর্যটক আটকা পড়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।দক্ষিণ আমেরিকার এ দেশটি কয়েক বছর ধরেই তীব্র রাজনৈতিক সংকটকাল পার করছে।নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ক্যাস্তিয়ো এক ঘোষণায় দেশের পার্লামেন্ট কংগ্রেস বিলুপ্ত করে জরুরি অবস্থার ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন জানানো পর সাম্প্রতি সংকটের সূচনা হয়।তবে তার ওই পরিকল্পনা ‘ব্যাকফায়ার’ করে, কংগ্রেস উল্টো প্রেসিডেন্টকেই অভিশংসনে ক্ষমতাচ্যুত করে বলুয়ার্তেকে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা দেয়।এর পরপরই ক্যাস্তিয়োকে আটক করা হয়, তার বিরুদ্ধে এখন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তদন্ত চলছে।বামপন্থি এ রাজনীতিক তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে নিজেকে এখনো দেশটির বৈধ প্রেসিডেন্ট দাবি করছেন।

তার সমর্থক বিক্ষোভকারীরা কংগ্রেস ভেঙে দিতে এবং আগাম নির্বাচনের দাবিতে তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে।শুক্রবার কংগ্রেস নির্বাচন আগামী বছর এগিয়ে আনার একটি প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছে।বৃহস্পতিবার কেন্দ্রস্থ আয়াকুচো অঞ্চলে ক্যাস্তিয়ো সমর্থক ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পেরুর স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিক্ষোভকারীদের একাধিক প্রধান সড়ক ও কয়েকটি বিমানবন্দর আটকে দিতে দেখা গেছে।  বৃহস্পতিবারের ওই সংঘর্ষের কয়েক ঘণ্টা পর শিক্ষামন্ত্রী প্যাট্রিসিয়া কোরেয়া জানান, তিনি পদত্যাগ করছেন।

“দেশের জনগণের মৃত্যুর কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। রাষ্ট্রীয় সহিংসতা অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং মৃত্যুর কারণ হতে পারে না,” শুক্রবার টুইটারে দেওয়া পোস্টে এমনটাই বলেছেন তিনি।পরে সংস্কৃতিমন্ত্রী জাইর পেরেজও পদত্যাগ করেন।বিক্ষোভ দেশটির পর্যটন খাতেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে।কুসকোর মেয়র প্যারিসভিত্তিক একটি বার্তা সংস্থাকে বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা টার্মিনালে হানা দেওয়ায় বিমানবন্দর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শহরটিতে প্রায় ৫ হাজার পর্যটক আটকা পড়েছেন।এই শহরটিই মাচুপিচুর প্রবেশদ্বার, প্রাচীন এই ইনকা স্থাপনাটি দেখতে বছরে লাখ লাখ পর্যটক পেরুতে যায়।রেলওয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্থাপনাটি যে পাহাড়ে অবস্থিত তার পাদদেশের ছোট শহরেও ৮০০ পর্যটক আটকা পড়েছেন।অনেক মার্কিন ও ইউরোপীয় পর্যটক পরে কুস্কোতে ফিরতে রেললাইন ধরে পায়ে হেঁটে শহর ছেড়েছেন বলে জানা গেছে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য