স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা, ১৯ অক্টোবর: পশ্চিমা দেশগুলোর ভ্রুকুটির তোয়াক্কা না করে রাশিয়াকে ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রসহ আরও ড্রোন দিতে প্রতিশ্রুতিদ্ধ হয়েছে ইরান।ইরানের দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং দুই ইরানি কূটনীতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে একথা জানিয়েছেন। ইরানের এ পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা শক্তিধর দেশগুলোকে আরও ক্ষুব্ধ করে তুলবে বলেই মনে করা হচ্ছে।ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মন্ত্রীরা সোমবারই ইরানকে হুঁশিয়ার করে বলেছিলেন, ইউক্রেইন যুদ্ধে তেহরানের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেলে আলাদাভাবে তাদের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।তাছাড়া, ড্রোন এভাবে হস্তান্তর করাটা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২০১৫ সালের প্রস্তাবনার লঙ্ঘন বলেও উল্লেখ করে ফ্রান্স ও জার্মানি। তবে ইরানের একজন কূটনীতিক এমন যুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছেন।তিনি বলেন, “ড্রোনগুলো কোথায় ব্যবহার করা হচ্ছে সেটি বিক্রেতার দেখার বিষয় নয়। আমরা পশ্চিমাদের মতো ইউক্রেইন যুদ্ধে কোনও পক্ষ নেইনি। আমরা কূটনৈতিক উপায়ে এ সংকটের অবসান চাই।”সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহে ইউক্রেইন যুদ্ধে ইরানের তৈরি শাহেদ-১৩৬ কামিকাজে ড্রোন দিয়ে রাশিয়ার হামলা চালানোর খবর জানায় কিইভ। তবে রাশিয়াকে ড্রোন সরবরাহ করার কথা ইরান অস্বীকার করে।এর মধ্যেই ইরানি দুই কূটনীতিকের একজন জানিয়েছেন, “রাশিয়া আরও ড্রোন এবং লক্ষ্যে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম উন্নতমানের ইরানি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে, বিশেষ করে ফাতেহ এবং জোলফাগার ক্ষেপণাস্ত্র।”এ বিষয়ে ব্রিফিং পাওয়া পশ্চিমা একজন কর্মকর্তাও নিশ্চিত করে জানিয়েছেন যে, জোফালগারসহ ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপণযোগ্য স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে ইরান এবং রাশিয়ার মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে।গত ৬ অক্টোবরে এই চুক্তি হয়। সে সময় ইরানের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার, ইরানের প্রভাবশালী রেভল্যুশনারি গার্ড বাহিনীর দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের এক কর্মকর্তা ওইসব অস্ত্র দেওয়া নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আলাপ করতে মস্কো সফর করেন।ইউক্রেইন যুদ্ধে মস্কোর অস্ত্রভান্ডারে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন দেখা গেলে তা ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোর উত্তেজনা বাড়াবে।রাশিয়া অবশ্য এখন পর্যন্ত ইরানের অস্ত্র ব্যবহারের কথা অস্বীকার করেছে। ইউক্রেইনে ইরানের তৈরি ড্রোন ব্যবহার হয়েছে কিনা সে প্রশ্নের জবাবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, এগুলো ব্যবহারের বিষয়ে কোনও তথ্য ক্রেমলিন পায়নি।রাশিয়ার অস্ত্রশস্ত্রই ব্যবহার করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আরও কোনও প্রশ্ন থেকে থাকলে তা প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়কে করা উচিত।” তবে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও সাড়া দেয়নি।ওদিকে, ইউক্রেইনে ড্রোনের ব্যবহার নিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে মিথ্যা বলার অভিযোগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র কারিন জ্য-পিয়ারে।অন্যদিকে, ইউরোপীয় এক কূটনীতিক তার দেশের মূল্যায়ন তুলে ধরে বলেছেন, শিল্পখাতে নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে রাশিয়ার নিজস্বভাবে অস্ত্র তৈরি করা কঠিক হয়ে পড়েছে। সে কারণেই তারা এখন ইরান এবং উত্তর কোরিয়ার মতো মিত্র দেশগুলো থেকে অস্ত্র আমদানির দিকে ঝুঁকছে।
পশ্চিমাদের উপেক্ষা করে রাশিয়াকে আরও ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছে ইরান
সম্পরকিত প্রবন্ধ