স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা , ৫ ফেব্রুয়ারি : গৃহবধূকে পুড়িয়ে মারার দায়ে গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ি লোকজনদের সাজা ঘোষণা করল আদালত। বুধবার সেই মামলায় অভিযুক্ত মৃতার স্বামী ও শাশুড়িকে কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন কমলপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সাম্যবিকাশ দাস। ঘটনার বিবরণে প্রকাশ গত ২০০৯ সালে সালেমার মেন্দি এলাকার মঙ্গল দেববর্মার ছেলে জিতেন্দ্র দেববর্মার বিবাহ হয় পশ্চিম ডলুছড়ার বাসিন্দা সুকুমার দেব্বর্মার কন্যা জুমেলী দেববর্মার। কিন্তু বিয়ের দুইমাস পর থেকেই জুমেলির উপর নির্যাতন চলে বাপের বাড়ি থেকে পন এনে দেবার জন্য।
এই নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত ছিল গৃহবধূ জুমেলির শশুর মঙ্গল দেববর্মা, স্বামী জিতেন্দ্র দেববর্মা ও শাশুড়ি সুখমতি দেববর্মা। ২০১২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর তার উপর নির্যাতন করা হয়। পরে সেদিন বিকালবেলা তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ধলাই জেলা হাসপাতাল কুলাই ও পড়ে আগরতলা জি বি পি হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানেই দগ্ধ হয়ে জুমেলির মৃত্যু হয়। এদিকে জুমেলির পিতা সালেমা থানায় তার কন্যার স্বামী জিতেন্দ্র, শশুর মঙ্গল ও শাশুড়ি সুখমতির নামে অভিযোগ দায়ের করে।
অভিযোগ পনের জন্য তার কন্যাকে হত্যা করা হয়েছে বলে। সালেমা থানার পুলিশ মামলা নেয় ৩৮/২০১২/আন্ডার সেকশন -৪৯৮(এ )/৩০৭ আই পি সি ধারায়। জুমেলির মৃত্যু হওয়ায় ৩০৪(বি)ধারা যুক্ত হয়। মামলার মোট সাক্ষী ছিল পঁয়ত্রিশজন। শুনানি চলাকালীন অন্যতম অভিযুক্ত তথা মৃতার শশুর মঙ্গল দেববর্মার মৃত্যু হয়। বুধবার সেই মামলার সাজা ঘোষণা হয়। অভিযুক্ত তথা মৃতার স্বামী জিতেন্দ্র দেববর্মাকে ৩০৪(বি )ধারা অনুসারে দশ বছরের কারাদণ্ড ও ৪৯৮(এ)অনুসারে একবছরের কারাদণ্ড পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এবং মৃতার শাশুড়ি সুখমতি দেব্বর্মাকে ৩০৪(বি)ধারা অনুসারে সাত বছর কারাদণ্ড ও ৪৯৮(এ)ধারা অনুসারে আরও এক বছরের কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ও জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সাম্যবিকাশ দাস। সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডিশনাল পি পি ইন্দুভূষণ দেব বলে জানান।