স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৩ আগস্ট : মঙ্গলবার যখন সারা রাজ্যে এডিসি দিবস উদযাপন করা হচ্ছে, তখন আচমকা রাজনৈতিক সন্ত্রাসে অগ্নিগর্ভ মুঙ্গিয়াকামী বাজার। বিজেপি জনজাতি মোর্চার বাজার সভাকে কেন্দ্র করে মুঙ্গিয়াকামী বাজারে তিপ্রা মথা দলের কর্মী সমর্থকদের হাতে আক্রান্ত জনজাতি মোর্চার রাজ্য সভাপতি বিকাশ দেববর্মা সহ উভয় দলের বেশ কয়েকজন কর্মী সমর্থক।
সূত্রের খবর, আগামী ২৯ আগস্ট বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জে.পি. নাড্ডা রাজ্য সফরে আসবেন। এদিন জেপি নাড্ডা খুমুলুঙে সবার সংগঠিত করার কথা রয়েছে। সে মোতাবেক চলছে সমস্ত প্রস্তুতি। মঙ্গলবার বিজেপি রাজ্য জনজাতি মোর্চার রাজ্য সভাপতি বিকাশ দেববর্মা মুঙ্গিয়াকামী বাজার এলাকায় বাজার সভায় অংশগ্রহণ করতে মুঙ্গিয়াকামী’তে যান। এদিকে তিপ্রা মথা দলের কর্মী সমর্থকেরা আগে থেকেই মঙ্গিয়াকামী বাজারে জড়ো হয়ে থাকে। মুঙ্গিয়াকামী বাজারে বিকাশ দেববর্মা’র উপস্থিতিতেই উত্তেজিত হয়ে উঠে তিপ্রামথা দলের কর্মী সমর্থকরা বলে অভিযোগ। মুহূর্তের মধ্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। তখন আচমকাই তিপ্রামথা দলের একাংশ দুষ্কৃতিকারীরা বিকাশ দেববর্মার উপর প্রাণঘাতী হামলা চালায় বলে অভিযোগ। গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন তিনি।
এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ, টিএসআর সহ আধা সামরিক বাহিনী। পরবর্তী সময় প্রাণ বাঁচাতে বিকাশ দেববর্মা আশ্রয় নেয় মুঙ্গিয়াকামীস্থিত সি.আর.পি.এফ ক্যাম্পে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর পুলিশ বিকাশ দেববর্মা’কে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে চাকমাঘাট স্থিত ২৯ কৃষ্ণপুর মন্ডল কার্যালয়ে পৌঁছে নিয়ে যায়। যদিও এই ঘটনায় উভয় দলের কর্মী সমর্থক অল্প-বিস্তর আহত হয়েছে। পরবর্তীতে সেখান থেকে বিকাশ দেববর্মা’কে দলীয় কর্মী সমর্থকেরা নিয়ে আসে তেলিয়ামুড়া মহাকুমা হাসপাতালে।
ঘটনার খবর পেয়ে তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালে ছুটে যান প্রদেশ জনজাতি মোর্চার সহ-সভাপতি পাতাল কন্যা জমাতিয়া। তিনি আহত দলীয় কার্যকর্তা সহ জনজাতি মোর্চার রাজ্য সভাপতি বিকাশ দেববর্মার সঙ্গে কথা বলে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, এদিনের আক্রমণের ঘটনা পরিকল্পিতভাবে করছে তিপ্রা মথার কর্মী সমর্থকরা। এবং এদের হামলার সময় তাদের কাছে ছিল ধারালো অস্ত্র। এবং প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ বলছেন, ২০২৩ এর বিধানসভা নির্বাচন তাদের জন্য শেষ লড়াই। আর এই শেষ লড়াইয়ের কয়েকমাস আগেই পাগল কুকুরের মতো তান্ডব শুরু করেছে বলে কটাক্ষ করলেন পাতাল কন্যা। এদিনের ঘটনার সাথে জড়িত দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানান তিনি।
পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। জনজাতি মোর্চার পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়েছে যাতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ আইনত কঠোর শাস্তি ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কিন্তু ভিলেজ কমিটির নির্বাচন এবং বিধানসভার নির্বাচনের কয়েক মাস আগে পাহাড়ে জনজাতিরা নিজেদের মধ্যে যে রাজনৈতিক সন্ত্রাস শুরু করেছে তাতে উঠে আসছে নানা প্রশ্ন। কারণ জনজাতির নেতৃত্বরা আওয়াজ তুলছে বিভিন্ন দাবি যাওয়া পূরণের জন্য তিপ্রাসাদের এক মঞ্চে আসার জন্য। আর এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি ৩৬০ ডিগ্রি বদল হয়ে গেছে। তিপ্রাসার নেতারাই তিপ্রাসাদের জন রুশে পড়ছে বলে অভিমত রাজনৈতিক মহলের। এবং ভারতীয় জনতা পার্টির সভাপতি রাজ্য সফরের পাকলগ্নে রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকাতে অশান্তির চেহারা ধারণ করায় পরিস্থিতি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে নানা প্রশ্ন। এদিনের ঘটনায় এলাকায় পরিস্থিতি থমথমে।